সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জানুয়ারী, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

হঠাৎ, পথে বিষাদ-ফলক!

  কয়েকদিন আগে ছেলেকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পথে, ঢাকুরিয়া ষ্টেশনের ১ নং প্লাটফর্ম থেকে বাঁ দিকে নেমে বাবুবাগান লেনের মধ্য দিয়ে হাঁটছিলাম ঢাকুরিয়া ব্রিজের দিকে। দু পাশে বাড়ি ঘর দেখে মনে হয় বেশ অভিজাত পাড়া। দোকানবাজারের কোলাহল সেরকম নেই। যাও বা আছে শিষ্টতার গণ্ডীর মধ্যে। মেরে কেটে দশ থেকে বারো ফুট চওড়া হবে রাস্তা। তাই গাড়ি ঘোড়ার দাপাদাপি একেবারে নেই। পথচারীরাই এই পথের আসল হিরো। যাই হোক, এই ধরনের পথে আমাদের মত লোক যারা দু দিকের সব কিছু জরিপ করতে করতে যায় তাদের হাঁটতে বেশ ভালোই লাগে। কোলকাতা শহরে এখন জীর্ণ পুরনো বাড়ি, রাস্তায় বেরুলে খুব একটা দেখা যায় না। P romoter দের নেক নজর এড়িয়ে যে কটি এখনও দাঁড়িয়ে আছে, সে গুলি “শহীদ মিনার”। এটি আমার একদম নিজস্ব মত। কেমন যেন আমার মনে হয় বাড়ি গুলি এক প্রকার শ্লাঘা, দ্যাখো আমি এখনও দাঁড়িয়ে আছি -ধরনের বীরত্বপূর্ণ বলিদানের দেমাক কে ছেঁড়া শালের মত গা থেকে ফেলতে দেয় না। তাতে কিছু অসুবিধা নেই। বরং আমার বেশ ভক্তিই হয় ওই বাড়ি গুলো কখনো নজরে এলে।                                 ...

নীরবতার উদযাপন পুকুর ঘাটের পথে!

 কথা নয়। নীরবতার সাথে মূক হৃদয়ের অ-বাক সংলাপ। নীরবতার উদযাপন। আকণ্ঠ নীরবতায় ডুবে পুকুর ঘাটের পথ বুঁদ হয়ে শোনে জলের নগ্নতায় বাতাসের ফুরফুরে সন্তরণে বেজে চলা জলতরঙ্গ। জলকে চারদিক থেকে আগলে রাখা পাড়ের কাছে তা পরকীয়া। তাই পুকুর ঘাটের পথ উৎকর্ণ নীরবতায় অপেক্ষা করে, কখন বাতাসের সে কোমল শৃঙ্গার রাগ পাড়ের বুকে সলজ্জ ছলাৎ হয়ে বাজবে। অনেকটা কামরাঙার ডালে বসা মাছরাঙার মতন। নিষ্কম্প চোখ, নিথর ডানা যেন পটে আঁকা ছবি।  নীরবতা যে এখানে নির্নিমেষ সম্ভোগ! কখন যে মীনপুচ্ছের চটুল খুনসুটিতে নিটোল জলের গালে পড়বে এক টুকরো শরমের টোল। কে জানে! পুকুর ঘাটে আসা পথের বুকে খালি নীরবতার মদিরা ঝরে যায় অবিরাম।  নীরবতার ভোজবাজীতে, ভেজা ডুমুর পাতার গা গড়ানো ফোঁটা ফোঁটা জল পুকুরের ডাগর বুকে ফুটিয়ে তোলে সুডৌল স্তন বৃন্ত, চারিদিকে যার আলুলায়িত বৃত্তাকার ঢেউ; যেন জলের উপর আঁকা নিবিড় স্রোতের আলপনা। এ পথে নীরবতার সূত্রে বাঁধা পড়ে পুকুর, পুকুরের কচি কলাপাতা-রঙা জল, জল ছুঁয়ে থাকা লাল শান বাঁধানো ঘাট, ঘাটের ধাপ, ধাপে ধাপে তার পাড়ে  উঠে যাওয়া  সহ সেই নৈর্ব্যক্তিক পথ, সবুজ ঘাস মাড়িয়ে যেটি  ঘাটে পৌঁছায়।...

"পথের পাঁচালী" র লেখক বিভূতিভূষণের কি এটাই প্রাপ্য ছিল?

 "প্রেম নেই, কেচ্ছা কেলেঙ্কারি নেই,  এমনকী খুন জখমও নেই, শুধু গ্রামের বর্ণনা - ওসব চলবে না।" জনৈক প্রকাশক "পথের পাঁচালী" কে বই হিসেবে ছাপার প্রশ্নে এই ভাষাতেই তার বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন। আর একজন তো, "না মশাই কোন পাঁচালী ছাপানো সম্ভব নয় আমার পক্ষে" বলে এড়িয়েছিলেন। এখন এত দিন পরে, সেদিনকার কতিপয় প্রকাশকের "পথের পাঁচালী"র সঠিক মূল্যায়ন না করতে পারার অক্ষমতা নিশ্চিত ভাবেই আজকের সমগ্র প্রকাশক সমাজকে পীড়িত করে।  লেখক জীবনের একেবারে বেড়ে ওঠার বেলাতেই এমন প্রত্যাখ্যান আর দ্বিরুক্তি বিভূতিভূষণের মনে যে দুরপনেয় ক্ষত তৈরি করেছিল, হয়তো বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা উপন্যাসের স্রষ্টা হিসেবে এটা তাঁর  প্রাপ্য ছিল না। বিভূতিভূষণ যিনি তিন-বছর ধরে অনেক কষ্ট করে "পথের পাঁচালী" লিখেছিলেন এবং শেষমেশ উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত 'বিচিত্রা'র পাতায় তারও বেশ কিছু দিন পরে পনেরোটা কিস্তিতে ছাপাতে সমর্থ হয়েছিলেন - সে কথা আমি আমার পুরনো একটা লেখায় লিখেছিলাম "পথের পাঁচালী" এবং তার তিন বছরের প্রকাশ-যন্ত্রণা" এই শিরোনামে।   এ কথা ঠিক, ...