সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মে, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মাদাগাস্কার থেকে বাংলাঃ দেদার রংবাজি - গ্রীষ্মের পথে, প্রান্তরে।

  গ্রীষ্মের পথে জলের পীপাসা না মিটলেও, রঙের পীপাসা মিটবেই। সূর্য যখন তার অনুপম কর শৃঙ্গারে আগুন ধরায় ধরিত্রীর হোমকুণ্ডে, সুরের দেবতার অগ্নিবীণা থেকে ফুটন্ত খেজুর রসের রেশমী ধারার মত হাওয়ায় ওড়ে অগ্নিশুদ্ধ মরু মূর্ছনা; রাবাবের তপ্ত তারে ছড় টেনে টেনে আগুনের হলুদ মাখা দীপক রাগে দগ্ধ সুর ওঠে পঞ্চমে, সেই দহন বেলায় স্বর্গ থেকে ঝরে পড়ে আশীর্বাদী ফুল। ফুটে ওঠে – কৃষ্ণচূড়া   ফুরুস  কিংবা সোঁদাল হয়ে।   কৃষ্ণচূড়ার রাজকীয় লালিমা ( Royal Poinciana)  যদি  গ্রীষ্মের শুষ্ক নিরশ্রু দৃষ্টিপথে  বয়ে আনে হৃদয়ের দু কূল ছাপানো শোণিত ধারার উচ্ছল প্লাবন, কপার কান্তি কনকচূড়া ( Copper Pod) তাহলে গ্রীষ্মের নিরস দ্রিশ্যমানতায় সঞ্চারিত করে হরিদ্রাভ পরাগের তীব্র অভিসার স্পৃহা। ঝিরি ঝিরি ফার্ন সদৃশ ঘন সবুজ পাতার ভিত্তি সজ্জায় উন্মোচিত কনকচূড়ার পুষ্পমঞ্জুরি যেন অজস্র হলুদ দীপের স্বর্ণাভ পীলসুজ হয়ে ফুটে থাকে গাছের মাথায় মাথায়। গ্রীষ্মের এমন অপরূপ রং-লীলার নেপথ্যে কিন্তু  রয়েছে প্রকৃতির অভিবাসী সংস্কৃতির অবদান। যেমন - এ দেশের গ্রীষ্মে যার অনবদ্য হলুদ শিখার সৌন্দর্য সকলের নজর কাড়...

পথে নয় বেপথেই ঝরে চাঁদ থেকে মধু!

    জলঙ্গির নিস্তরঙ্গ জলে - সবে অম্বর রাজ্যের চন্দ্র বণিক ভাসিয়েছে তার রজতপঙ্খি নাও। সেতুর উপর দাঁড়িয়ে দেখছিলাম, গুম মেরে থাকা সন্ধ্যার অন্ধকারটাকে,  ধীরে ধীরে চাঁদের আলোয়  দ্রবীভূত হয়ে যেতে। নদীর বুক, পাড়, বালির চর, কাশবন যেন রূপোলী রশ্মির ঝরনা তলায় শুয়ে থাকা সাপের খোলসের মত   জেগে উঠছিল লুপ্ত আয়নায় হারানো স্বপ্নভঙ্গের ইতিহাস হয়ে। নদীর পশ্চিম পাড়ের কংক্রিটের বেঞ্চ গুলিতে তখন বেশ কয়েকজন যুবক যুবতী চুটিয়ে প্রেম করাতে ব্যস্ত। চাঁদের আলোয়, আদরের আড়াল খুলে পড়লেও, উন্মাদনায় কিছু মাত্র ভাটা পড়েছিল বলে মনে হয় না। জলঙ্গির জলে, সেই সময় নাইতে নামা পূর্ণিমার চাঁদ যেন টলটলে পদ্ম পাতা - স্থির, নিষ্কম্প। অবচেতনের লজ্জায় সেদিনকার সেই চাঁদের অবগাহন ছিল অভিসারিণীর মত। গোপন মধুযাপনের স্বপ্নে বিভোর। সেতুর উপর, আমার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল এক তরুন, একা। বিক্ষিপ্ত খেয়ালে সে বারবার নদীর জলে ইট ফেলে বিস্রস্ত করে দিচ্ছিল স্বপ্নের ঘোর। অহেতুক ঢেউয়ের দোলায় ভেঙ্গে যাচ্ছিল জলে ভেজা চাঁদের শরীর। পাগল করা জ্যোৎস্না ধারায় যদিও তা কোনো দাগ কাটতে পারছিল না। আসলে কিছু মানুষ, ওই ছেলেটির মত একা সেতুর উপর...

পথে পাতানো দাম্পত্যে সঙ্গী বদলের রোমান্টিকতা!

  ঢাকুরিয়া ষ্টেশনের ১ নং প্লাটফর্মের উপরে দেখেছিলাম, তাদের! উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত প্লাটফর্মটির মাথা যদি শিয়ালদার দিকে হয়, তবে তার একেবারে লেজের দিকটায়, প্রথম যে সিঁড়িটা ষ্টেশন থেকে বেরিয়ে বাঁ দিকে নেমে গেছে ধাপে ধাপে, দেখতে যেটাকে অনেকটা পুরনো দিনের পুকুর ঘাটের মত লাগে, তার ঠিক মাথায়। দেখেছিলাম, দুজনে দাঁড়িয়ে আছে, একসাথে। একই বেদিমূলে। ত্রিভঙ্গ ঢঙ্গে, মুখোমুখি। ইট- সিমেন্টের উপর লাল রঙ লেপা একটা গোলাকার অনুচ্চ ঘেরাটোপের মধ্যে পাশাপাশি, যেন নৈকট্যের নৈশব্দ ভেঙ্গে আলিঙ্গনের আগ্রহে উন্মুখ, বিমূর্ত কোনো ভাস্কর্য জুটি! একজনের পরনে ধুলোবালিতে ভরা সরু পাড়ের, মলিন একখানা সাদা ধুতি। আর একজনের, লাল ছাপা শাড়ী। সিঁদুর-চন্দন চর্চিত দেহ কাণ্ডের মাথায় ঘন পল্লবে ঢাকা নিবিড় যৌথ যাপন, তাদের। মৃদু বাতাসেও মনোরম গা ঘেঁষাঘেঁষি সঙ্গে কখনো রিমঝিম কখনো ফুরফুরে খুনসুটি। গেরস্থালীর উপকরণ বলতে ঝুলে থাকা দুচারটি মাটির কলসী। পায়ের কাছে ছড়ানো গাঁদা, মালতী, বেল, তুলসী। আর পুড়ে যাওয়া ধূপের ছাই। ট্রেন লাইনের যাত্রী থেকে পথচলতি মানুষজন সবাই এদের সামনে একবার অন্তত কপালে হাত ঠেকিয়ে ঠুকে যান প্রনাম-সেলাম। আমি একদিন, প...