সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুন, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

নিয়তিতাড়িত মানিক!

বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রয়ীর অন্যতম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যে প্রবেশ ঘটে ১৯২৮ সালে। ২০ বছর বয়সী মানিকের সাহিত্য ক্ষেত্রে যখন এই পদার্পণ সূচিত হচ্ছে তখন এই ত্রয়ীর প্রথম জন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবির্ভাব ঘটে গেছে তারও সাত বছর পূর্বে। ১৯২১ সালে ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘উপেক্ষিতা’ গল্পের মাধ্যমে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে  প্রথম পরিচয় হয় বাংলা র পাঠক সমাজের। এর চার বছর পরে অর্থাৎ ১৯২৫ সালে ভাগলপুরে থাকাকালীন বিভূতিভূষণ তাঁর জীবনের প্রথম উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ লেখা শুরু করেন। লেখা শেষ করতে লেগে যায় তিন বছর। উল্লেখযোগ্য ভাবে ১৯২৮ এ যখন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবির্ভাব ঘটছে, একই বছরে বিভূতিভূষণের লেখা আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’র ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হওয়া শুরু হচ্ছে ‘বিচিত্রা’র পাতায়। বিভূতিভূষণ এবং মানিকের পরে তৃতীয় বন্দ্যোপাধ্যায় - তারাশঙ্করের আবির্ভাব হচ্ছে আরও চার বছর পরে । ১৯৩২ সালে ‘চৈতালী ঘূর্ণি’ নামক উপন্যাস দিয়ে বাংলা সাহিত্যের উঠোনে প্রথম পা রাখেন তারাশঙ্কর । তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বহু তারকা খচিত বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল আক...

স্মৃতির হাটের কথকতা!

স্মৃতি কি একটি শক্তি নাকি তা কোনো পছন্দের সুগন্ধি যাকে বারবার স্মৃতির সুরাগ দিয়ে স্বর্গের পারিজাত করে হৃদয় বাগিচায় ফুটিয়ে রাখতে চায় মানুষ! নাকি তা - কখনো মর্মোদ্ধার করতে না চাওয়া কোনো দুর্বোধ্য শিলালিপি, যাকে ভুতুড়ে বাড়ির মতো সবসময় পাশ কাটিয়ে যাওয়ার ফিকির খোঁজে মন! প্রসঙ্গত আমার ছয় পিসির মধ্যে জ্যেষ্ঠতমা, যিনি আজ কয়েকবছর হোল প্রয়াত হয়েছেন, আমার ঠাকুরদা আদর করে তাঁর নাম রেখেছিলেন স্মৃতিরেখা। সত্যি সত্যিই স্মৃতি একটি রেখার মতন।  কখনো তা মনের আকাশে উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে থাকা ধ্রুবতারা থেকে নির্গত ঋজু আলোক রেখার মতন স্পষ্ট, আবার কখনো তা ধুসর হয়ে যাওয়া সেই রশ্মী যা লক্ষ মন্থনেও প্রতিভাত হতে পারে না।  আমাদের মস্তিস্কে  রয়েছে প্রায় ১০০০০ মিলিয়ন বা এক হাজার কোটি স্মৃতি কোষ। শৈশব থেকে সেই সব স্মৃতি প্রকোষ্ঠ গুলিতে সঞ্চিত হতে থাকে হাজারো স্মৃতি লেখা।  বিজ্ঞানের মতে একজন শত বর্ষ বয়সী মানুষ তার সারা জীবনের স্মৃতি-সঞ্চয় দিয়েও মস্তিস্কের সকল স্মৃতি কোষ পূর্ণ করে উঠতে পারেন না। অর্ধেকের বেশিই ফাঁকা পড়ে থাকে।  তবু কেন মানুষ ভুলে যায়। তিল তিল করে গড়ে ওঠা স্মৃতির লাইব্রেরী তে যখন অঢে...

সময়ের দরজায়...!

সময়ের দরজায় সুযোগের ডেলিভারি বয় এসে টোকা মেরেছিল বটে, অনেকটা কাঠঠোকরার মতন - যে ক্রমাগত তার ধারালো, শক্ত চঞ্চু দিয়ে আপাত সংবেদনহীন কোনো ঋজু অর্জুন কিংবা কোনো বঙ্কিম আমের ধূসর গুঁড়িতে বিরামহীন ভাবে ঠুকরে গিয়েও অসার শ্বেতসার তুল্য অসাড় উপেক্ষা ছাড়া কিছুই পায় নি সময়ের কাছে। যদিও সময়ের দরজায় তার অমোঘ আগমনের বার্তা আফশোসের ইতিহাস হয়ে লটকে থাকে চেতনার বাকি আয়ুষ্কাল জুড়ে। সময়ের দরজায় দূর্যোগের ভীষণ ঝড় কিন্তু আসে আচম্বিতে; অতর্কিতে বিষাক্ত সাপের লেজে পা দিলে যেমন চকিতে ল্যান্ডফল হয আক্রমনের, তেমনি। সময়ের দরজায় মাধবীলতার আবেগমন্ডিত সুবাস ঠেলে ঢোকার চেষ্টা করেও অনেকসময় বিফল হয়ে ফিরে যায়। সময় তার গন্ধের কদর ভালো করে বোঝার আগেই তার অপাপবিদ্ধ কৌমার্য হারিয়ে যায় অচেনা নষ্টনীড়ে। জ্যৈষ্ঠের প্রচন্ড দাহে উত্তাল বাতাস হয়ে অতৃপ্ত আত্মার মতো ঘোরে দুপুর নদীর জঙ্গলী পাড়ে। ভেতর থেকে খিল দেওয়া সময়ের দরজায় তখন শুধুই লোক দেখানো অহেতুক উন্নাসিকতার আদিখ্যেতা, বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না অবস্থা। কখনো তারা গোনা ছাদের বুকে একলা, একা গোপন স্পর্শ সুখ এসে দাঁড়ায় সময়ের দরজায়। সময় গম্ভীর...

খোলা জানালার ইতিকথা!

  খোলা জানালায় একটা আস্ত আকাশ উঁকি মারে। সেই নীল আকাশ, যেখানে মুক্তির পাখা মেলে রাত্রি শেষের পাখিরা। কাঁচা মিঠে রোদ এসে পড়ে আঁধার ক্লিষ্ট ঘরের দুমড়ানো শতরঞ্জি পাতা ভাঙা মেঝের বুকে। খোলা জানালা জুড়ে তখন শুধুই আলোর কলকল ধ্বনি, জানালার শিক ভেঙে ঢুকে পড়ে, ছড়িয়ে দেয় টগর ফুলের মতন শিশির সিক্ত আলোর উজান রেখা। লেখা হয় নব পট বদলের অরূপ উপাখ্যান। খোলা জানালা দিয়ে কখনো কখনো নেমে আসে জীর্ণ মতবাদের বাষ্পে ভারাক্রান্ত পান্ডুর মেঘের ধূসর ছায়া। তখন বৃষ্টি নামে, অঝোর ধারায়। পাতার ফাঁক গলে ঢলে পড়ে শুষ্ক মৃত্তিকার চোখে, সজল অশ্রু পাতের সাক্ষর রেখে যায় নব অঙ্কুরোদগমে; নব পত্রিকায়; আনন্দের অশ্রু সম্ভারে। খোলা জানালায় তখন শুধুই ঘেঁটু ফুলের আমোদ, সোঁদা গন্ধ মাখা। বড় উদাস লাগে তখন। খোলা জানালাতেই কখনো হাওয়ার হিন্দোল বয়ে আনে বিপ্লবের চেতনা। শত বাধা, শত প্রতিরোধ - সব ভেঙে নিজেকে বিজয়ী যোদ্ধা ভাবতে ভালো লাগে তখন। কখনো চাঁদ ওঠে খোলা জানালার দৃষ্টি পথে। কখনো সে চাঁদ, বড় নিঃসঙ্গ। কখনো সে অসংখ্য তারা পরিবেষ্টিত সুন্দরী রাজ স্বয়ম্বরা। কখনো সে চাঁদ ধর্মের কখনো ধর্মের নামে ধান্দার। কখনো উপহা...