সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

এক বিরল প্লেন হাইজ্যাকার, প্রয়াত!

কোলকাতা থেকে লখনউ হয়ে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিল ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স এর IC 410 নং বিমান। ১৩২ জন যাত্রী নিয়ে প্লেনটি যখন লখনউ বিমান বন্দর ছাড়লো তখন বিকাল ৫ টা ৪৫. যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন দুজন মন্ত্রী। একজন এ কে সেন, আর একজন ধরম বীর সিনহা। কিছুক্ষণের মধ্যে ইন্টারকমে ভেসে এল বার্তা - দিল্লি ওর জাদা দূর নেহি হ্যায়। মাত্র ১৫ মিনিট বাকি পৌঁছতে। কিন্তু হঠাৎই ১৫ নং রো থেকে দুজন সিট ছেড়ে উঠে প্লেনের ককপিটের মধ্যে ঢুকে পড়লে, গোল বাধে। কারণ তাদের হাতে ছিল বন্দুক। সবাই হকচকিয়ে যান ঘটনার আচম্বিতে। এর মধ্যে ফ্লাইট ক্যাপ্টেন এম এন ভাটিওয়ালা কে একপ্রকার জোর করে প্লেন হাইজ্যাক হয়ে গেছে বলে ঘোষণা করতে বাধ্য করান তাঁরা। ভাটিওয়ালা তাঁদের নির্দেশ মত কম্পিত গলায় প্যাসেঞ্জারদের উদ্দেশ্যে বলেন- প্লেন এখন দিল্লির পরিবর্তে পাটনা চলে যাচ্ছে। আচমকা ঘটে যাওয়া ঘটনা পরম্পরায় প্যাসেঞ্জাররা সবাই তখন - বাকরুদ্ধ। এই বার ককপিট থেকে হাইজ্যাকাররা যাত্রীদের উদ্দেশ্য অভয় বার্তা দিয়ে ঘোষণা করলেন, ভয় নেই। তাঁরা যুব কংগ্রেসের সদস্য। তাঁরা যাত্রীদের কোনো রূপ ক্ষতি করবেন না। কারণ তাঁরা অহিংসায় বিশ্বাস করেন। যাত...

১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্ট, কোথায় ছিলেন গান্ধীজী?

১৫০/বি বেলেঘাটা মেন রোড। শিয়ালদহ স্টেশন ও ই-এম বাইপাস এর মধ্যে সংযোগ স্থাপন কারী মূল রাস্তা - বেলেঘাটা মেন রোড তথা সুরেশ চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রোডের ওপর পড়া এই বিশেষ ঠিকানা টি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে এক গৌরবময় স্মৃতির সাক্ষ্য বহন করছে । বিশেষ করে, প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় আসন্ন হলে, এই ঠিকানার কথা স্মরণ না করে থাকা যা য় না। কারণ ১৯৪৭ এ গোটা দেশ যখন স্বাধীনতার আনন্দ উদযাপনে ব্যস্ত, বিশেষ করে রাজধানী দিল্লিতে স্বাধীনতা লাভের (১৫ ই আগস্ট) দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখতে আয়োজিত হয়েছে অভূতপূর্ব রাজকীয় সমারোহের - যার শুভ সূচনা হয়েছে, ১৪ ই আগস্টের মধ্যরাতে; ১৫ তারিখ পদার্পণ করতেই দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর ঐতিহাসিক বক্তৃতা দিয়ে শুভারম্ভ হয়েছে স্বাধীনতা দিবস পালনের মহা নির্ঘণ্ট। এই উচ্ছ্বাস যদিও কাঙ্ক্ষিতই ছিল। কারণ দীর্ঘ ২০০ বছরের পরাধীনতার কৃষ্ণ কাল অতিক্রম করার পরেই দেশবাসীর কাছে এসে পৌঁছেছিল সে বিরল মাহেন্দ্রক্ষণ। সমাগত হয়েছিল সেই মহা মুহূর্ত যখন প্রায় শত বর্ষ ধরে চলা স্বাধীনতাকামী মহাযজ্ঞে মুক্তিলাভের সিদ্ধি স্পর্শ করছিল তার চূড়ান্ত শিখর দেশ। কিন্তু এই যজ...

"ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে......!"

কবিগুরুর অন্তিম যাত্রার সেদিনকার সে অলৌকিক ভিড়কে সশরীরে উপস্থিত থেকে চাক্ষুষ করেছিলেন সেসময়ের অনেক কৃতবিদ্য ব্যক্তিই। কেউ কেউ আবার ব্যস্ত ছিলেন বেতার কেন্দ্রের বিশেষ শোক জ্ঞাপনী অনুষ্ঠানে। আবার কেউ তা অবলোকন করেছিলেন রাস্তার পাশের বাড়ির ছাদ থেকে। কবির অমৃত লোকে যাত্রার সেই অমূল্য ক্ষণের কিছু খণ্ড চিত্র নিয়েই এই প্রতিবেদন।  বিশিষ্ট সম্পাদক সজনী কান্ত দাস ছিলেন  অন্যতম বিশিষ্ট ব্যক্তি- যিনি সেদিন সশরীরে উপস্থিত ছিলেন  কবির অন্তিম শোভাযাত্রায়। সেই সুবাদে   তাঁর ‘ শনিবারের চিঠি ’ পত্রিকার ভাদ্র সংখ্যাতে বেশ রসমিশ্রিত টিপ্পনী করেছিলেন সেদিনকার সে ক্রেজি ভিড়ের সম্পর্কে বলতে গিয়ে ,  “ সেদিন এত ভিড়ে বিখ্যাত ব্যাক্তিত্ব মৌলভি ফজলুক হক ,  শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ,  শরৎচন্দ্র বসু ,  রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়রা ভিড়ের মধ্যে মিশে বত্রিশ ভাজার মতো হয়ে গেছিলেন। তবে বাকী আমজনতার কথা না বলাই ভালো।"   বীভৎস ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে মাঝ পথেই বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন কবি পুত্র রথীন্দ্রনাথ ।  ফলে তাঁর পক্ষে আর পিতার মুখাগ্নি করা সম্ভব হয় নি। মুখাগ্নি করেছিলে...

২২ শে শ্রাবণ ও এক ক্রেজি ভিড়ের নেপথ্য কথা!

  ১৯৩৯ এ শুরু হওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখনও শেষ হয়নি। কোলকাতা শহরে তখন হামেশাই ব্ল্যাক আউট হচ্ছে জাপানী বোমারু বিমানের হাত থেকে বাঁচতে।    কিন্তু কোলকাতার মানুষকে সেদিন নামতেই হবে রাস্তায়। একদিকে বিশ্বযুদ্ধের ভ্রূকুটি অন্যদিকে অবিশ্রান্ত বৃষ্টি ধারায় প্যাচপ্যাচে পথঘাট – কিন্তু এ সব কিছুকে  উপেক্ষা করেই সেদিন লক্ষ মানুষের ঢল নেমেছিল রাস্তায় । যেন ঠাকুর বিসর্জনের কাতার নেমেছে পথে।  লক্ষ লক্ষ মানুষের মাথা , এক ঝোঁকে হেঁটে চলেছে গঙ্গার ঘাটের দিকে। ঠাকুরই বিসর্জন দিতে যাচ্ছিল কোলকাতার মানুষ সেদিন। কারণ তারিখ টা ছিল ৭ই আগস্ট , ১৯৪১ সাল , যে তারিখটি কালের আধারে ২২ শে শ্রাবণ হিসেবে চির স্মরনীয় হয়ে আছে এক অমোঘ  মহাপ্রস্থান কালের স্মৃতি চিহ্ন হয়ে । কারণ ওই দিন , দুপুর ১২ টা ১০ মিনিটে প্রয়াত হয়েছেন স্বয়ং ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ। আর যে কারণে তৈরি হয়েছে ঠাকুর বিসর্জনের এই অকাল মহরৎ।  বয়সের ভারে ন্যুব্জ কবি দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর প্রস্টেট গ্রন্থির সমস্যায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে, ২৫ শে জুলাই - চিকিৎসার অসুবিধার কারণে তাঁর প্রাণাধিক প্রিয় শান্তিনিকেতন ছেড়ে জোড়াসাঁকো...