সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

2025 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শিয়ালদহে সৈকত ছত্র!

সারি সারি রঙীন ছাতা , হঠাৎ দেখলে মনে হবে কোনো সমুদ্র সৈকতে এসে পড়েছি। যেভাবে, নামী সি বিচ গুলোয় বড় বড় রঙিন ক্যানোপি (ছাতার ছাউনি) বিশিষ্ট ছাতার তাঁবু গাড়া থাকে, তাদের কোনোটার নীচে হয়তো শাঁসওয়ালা ডাব বিক্রি হচ্ছে, কোনোটায় হয়তো চটপটি আবার কোনোটায় পাঁপড়ি চাট।  সাধারণত,  পলিয়েস্টার  কাপড়ে তৈরি, এই সকল রঙচঙে ছাতার ছাউনির নীচে অনেক সময় দোকান ছাড়াও, সুদৃশ্য বেতের চেয়ার পাতা থাকতে দেখা যায়, অনেকটা বাড়ির উঠোনের মতো। যে কারণে, হোটেল কিংবা রেস্তরাঁর লাউঞ্জে অথবা কোনো পান ভোজের আসরে, মুক্ত আকাশের নীচে এই ধরনের ছাতার ব্যবহার প্রায়শই আমাদের চোখে পড়ে। যে জন্যে এই ধরনের ছাতাগুলোকে প্যাটিও ছাতাও বলা হয়ে থাকে। স্প্যানিশ ভাষায় প্যাটিও কথার অর্থ বারান্দা বা উঠোন। তবে আমি এই ধরনের ছাতাকে প্যাটিও না বলে সৈকত ছত্র বলবো। কারণ সৈকতের সঙ্গে এই ধরনের ছাতার সম্পর্ক প্রায় অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। যেখানে এইরকম প্যাটিও ছত্র তলে বসে চেয়ারাসীন পর্যটকদের প্রায়শই চোখে বাইনোকুলার লাগিয়ে দূরের উত্তাল ঊর্মিমালায় ভাসমান নৌকা কিংবা অন্য কোনো জলযানকে, নিবিষ্ট দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায়। তবে এটি দীঘা ...

সকলেই গদাধর নয়!

বহুদিন আগে ' তকদিরওয়ালা ' বলে একটা হিন্দি সিনেমা দেখেছিলাম , তাতে জনপ্রিয় চরিত্রাভিনেতা কাদের খাঁন   যমরাজের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন । ছবিতে , সর্বক্ষণ একটা গদা কাঁধে করে , জমকালো পোষাক পরা কাদের খানের সেই বিখ্যাত সংলাপ , " হাম হ্যায় যম " আজোও মনের মধ্যে গেঁথে বসে আছে । তবে যমরাজ , সে যতই সবসময় গদা কাঁধে নিয়ে ঘুরে ঘুরে বেড়ান না কেন , গদাধর উপাধি কিন্তু ভগবান বিষ্ণুর জন্যই শুধু বরাদ্দ থাকে। আর সেই গদাধর বিষ্ণুকে দেখে কে না ভক্তিতে গদগদ হয় বলুন। তবে বিষ্ণুর গদা কখনো কাঁধে শোয়ানো থাকে না। গদার গজাল যুক্ত গোলাকার , মুগুর সদৃশ অংশটি যদি মাথা হয় এবং দন্ডাকার ধাতব অংশটি যদি পায়ের দিক হয় তবে বিষ্ণুদেবের বাঁম হাতে ধরা গদাটি সর্বদাই হেঁট মুন্ড ঊর্দ্ধ পদ অবস্থায় থাকে। অর্থাৎ যুদ্ধ নয় যুদ্ধ বিরতির আভাস থাকে তার মধ্যে। তবে গদা থাকবে অথচ গদার প্রহারে দুর্যোধনের উরু ভাঙার কথা হবে না সেটাই বা কি করে হয়। আমাদের পাড়ার কাশীদা আবার মহাভারত বিশে...

রবি বানাত রিল!

Happy birthday, রবি ঠাকুর! কেক কাটা চলছে, চকলেট রঙের গোল পিষ্টক পিন্ডের বুক চিরে তুলে আনা ত্রিভুজাকৃতি এক টুকরো কেক, অনিন্দ্যর হাতে ধরা সবুজ হাতলওয়ালা ছুরির অগ্রভাগে কিঞ্চিৎ বেসামাল লাগছে। পাশেই সিফন সুতোর ফুল তোলা, ধবধবে সাদা জমিনের টেবিল ক্লথ ঢাকা দেওয়া চেয়ারে, তির্যক হেলান দিয়ে বসানো হয়েছে পুষ্প মাল্য শোভিত কবিগুরুর, কাঠের ফ্রেম বন্দী ফটোকে। আগে, রবি ঠাকুরের মুখে ছোঁয়াও; তারপরে বাকিরা। হাততালি, হৈ হুল্লোড়, মোমবাতি জ্বালানো, ও হ্যাঁ - ব্লু টুথ দিয়ে, ইউ টিউব থেকে খুঁজে খুঁজে বার করা কপিরাইট মুক্ত রবীন্দ্রসঙ্গীত ও বাজছে ছোট্ট সাউন্ড সিস্টেমে। এখন এটাই চল। শিব ঠাকুর থেকে শুরু করে সরস্বতী, সব দেব দেবীরাই এখন যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে শিখে গেছেন। ইউ টিউব নির্গত মন্ত্র ধ্বনিতেই তাঁদের পূজা সম্পন্ন হচ্ছে আজকাল। রবি ঠাকুর তো এই সেদিনকার, ১৮৬১; অনেক আধুনিক! রবীন্দ্রজয়ন্তীর শুভদিনে, ছেলে মেয়েদের হিজিবিজি গলায় কবিতা আবৃত্তি, হারমোনিয়াম নিয়ে 'তুমি রবে নীরবে..' বলে গান করার চল, সে সব গত শতাব্দীর কথা। ফাল্তু সেন্টিমেন্ট। পাড়ার ছেলে মেয়েরা অন্তত এক মাস আগে থেকে 'ডা...

খরমুজ পৃথিবী!

গোলাকার হলেই কি তা পৃথিবীর সঙ্গে তুলনা করা যায় ! ঠিক আছে , বোঝার জন্যে মানলাম বোঁটার দিকটা অর্থাৎ বৃন্ত চ্যুতির স্থানটি যদি খরমুজের উত্তর মেরু বা সুমেরু হয় তবে এর ঠিক উল্টো দিকে আছে দক্ষিণ মেরু বা কুমেরু। বেশ , তর্কের খাতিরে না হয় এ পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু সুমেরু কুমেরু যদি থাকে , দ্রাঘিমা রেখা গুলি তবে কোথায় ? খরমুজ আসলে, সেটা দেখানোর জন্যই তো খরমুজের ছবি নিয়ে আসা। একেবারে সাদা চোখে , পরিষ্কার করে দেখিয়ে দেবো দ্রাঘিমা রেখা গুলোকে। কিন্তু সেটা কিরকম ! যতদূর জানি পৃথিবীতে দ্রাঘিমা রেখার অস্তিত্ব তো বিমূর্ত। বিশাল এই ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন স্থানের অবস্থানগত তারতম্য বোঝানো যখন বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছিল তখনই দিকচিহ স্বরুপ পৃথিবীর উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুকে জুড়ে মনে মনে এই বিমূর্ত রেখা গুলোকে কল্পনা করতে হয়েছিল , যাকে দ্রাঘিমা রেখা বলা হয়ে থাকে।   খরমুজের ক্ষেত্রে অবশ্য খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে উপর থেকে নীচ বরাবর টানা সবুজ রেখা গুলোকে। খরমুজের সাদাটে খসখসে গ...

ক্রিয়েটিভ ক্রীতদাস!

দিন তো মাত্র ২৪ টি ঘন্টার। অথচ কত কাজ বাকি , এমন হা হুতাশ করার লোকের সংখ্যা কিন্তু দিন দিন বাড়ছে। ২৪ এর জায়গায় , দিন তো আর ২৬ ঘন্টার হবে না , এ কথা বলার মধ্যে কিন্তু আশ্চর্য রকমের একটা সেলিব্রিটি সেলিব্রিটি ভাব রয়েছে। তোমরা প্রলেতারিয়েত , ছোটলোক দৈনিক আট ঘন্টার বেশী কাজ করবো না - ও সব কথা তোমাদের মুখেই সাজে। এই নিয়ে রক্তক্ষয়ী লড়াই টড়াই ও সব বড্ড ব্যাকডেটেড। সোজা কথা আমাদের চাই আরোও বেশী সময়। স্বামী বিবেকানন্দ না কে যেন বলেছিলেন , মানুষ জীবনের এক তৃতীয়াংশ সময় ঘুমিয়ে কাটায়। এই সময়ে স্বামীজী বেঁচে থাকলে নিশ্চিত ভাবে তাঁর বয়ান বদলে ফেলতেন। আরে ঘুমোবার সময় কোথায় ? ও সব ছোটবেলাকার কথা মনে করিয়ে লাভ কিছু হবে না। দশ পয়সার লজেন্স চুষেই হেব্বি মজা পেয়েছি তখন , কাগজের ঠোঙায় কুড়ি পয়সার ছোলা ভাজা খেতে খেতে মনে হয়েছে , ওহ্ এর চেয়ে আর ভালো কিছু হবেই না। তখন গন্ডা গন্ডা বাচ্চা জন্ম নিতো মানুষের পেটে , জন্ম নিয়ন্ত্রণের আইডিয়া - কি দরকার! ভগবান জন্ম দেন , তার অন্ন ও দিয়ে পাঠান। লে হালুয়া। কার কি করার আছে। জমিতে একবারই চাষ হতো , আষাড় মাসের শুরুর দিকে বীজতলা ফেলা আর তারপরে র...

বই বনাম ই-বইয়ের লড়াই!

আচ্ছা বলুন তো , বই খায় না মাথায় দেয় ? অবশ্যই বই খায় - তবে তা খায় ইঁদুর আর উই পোকায় , আর মাথায় দেয় নিঃস্ব , হতদরীদ্র , অভাবী মানুষ ; বালিশ না পেলে বইকেই বালিশ হিসেবে ব্যবহার করে তারা, তারপরে দিব্যি মাথার নীচে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে । বেনিয়াটোলা লেনের আনন্দ পাবলিশার্স ভবন। কিন্তু ব্যাপারটা কি একটু বেশী স্ববিরোধী হয়ে গেলো না ? দরীদ্র মানুষ, যার সাধারণ বালিশ পর্যন্ত জোটে না , সে রবীন্দ্রনাথ কিংবা বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা মোটা রচনাসমগ্র পাবে কোথায় মাথায় দেওয়ার জন্যে ? কিন্তু পেতো , যাদের পেটে দুটো ভাত না পড়লেও চলতো , কিন্তু ছাপা অক্ষর খেতে না পারলে যাঁদের খিদে মিটত না , সেই সমস্ত লোকেদের ঠিকই জুটে যেতো। তাঁরা সমাজে বই পোকা হিসেবে চিহ্নিত হতেন স্বগর্বে ।  চেয়ে চিন্তে , কখনো লাইব্রেরী - তা সে স্কুল কলেজ হোক কিংবা পাড়ার বেপাড়ার ছোট বড় গ্রন্থাগার যেখান থেকেই হোক তাঁদের বইয়ের গন্ধ না শুঁকলে ঘুম আসতো না। সম্পন্ন বই প্রেমীরা যদি বুকের ওপর বই রেখে ঘুমান তাহলে দরীদ্র বই ভক্তরা ,...