বৃষ্টি ভীষণ মেয়েলি , নামেই রয়েছে কেমন ফেমিনিস্ট গন্ধ। সন্ধ্যায় তাই যখন বৃষ্টি আসে - ফিসফিস করে, কথা বলে ; যেন কত গোপনীয়তা কন্ঠস্বরে। জানালা খুলে দিলে , মিষ্টি করে ছুঁয়ে দিয়ে যায় আদর ক’রে। খোলা ছাদে, একা আসতে বলে। হাওয়ায় বৃষ্টির আঁচল , সর্বদাই ভেজা থাকে ; তাই দিয়ে রোদে পোড়া মুখে , চোখে কত না আহ্লাদ তার! যখন মন - নুপুরের তিন তাল শুনতে চায়, তখন বৃষ্টি নর্তকীর মতো টাপুর টুপুর ধ্বনি তুলে নেচে দেয় শাল বৃক্ষের দীর্ঘ পত্রফলক পরে। কিশোরবেলায় যখন একান্তই স্কুলে যেতে মন সায় দেয় না , তখন বৃষ্টি ঝমঝম করে ঝরে পড়ে রাগী দিদিমনিদের মতন। বাড়ির বাইরে , রঙ্গন গাছটির মাথায় ফুটে থাকা লাল , থোকা থোকা ফুল গুলো তখন ভীষণ নাজেহাল , বৃষ্টির কড়া শাসনে ; কেঁদে কেঁদে খালি মাথা দুলিয়ে যায় - ওপরে নীচে। আবার ভূতের গল্প শুরু হলে কিন্তু , টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়ে ; ভয় পেয়ে যাওয়া কোনো কিশোরীর বুকের মতন, টিপ টিপ করা সেই স্বর। রহস্যের রাত্রে বৃষ্টি পড়ে নিঃশব্দে । যেন অচিনপুরে বন্দী থাকা কোনো রাজকন্যা; মুক্তির অপেক্ষায় যে নিতান্তই অসহায়, মূক-কন্যা সেজে ঝরে যায় অবিরাম...