ট্রামের ক্র্যাচারে জড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর শরীর। গুরুতর আহত অবস্থায় শম্ভু নাথ পণ্ডিত হাঁসপাতালের দু নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন, আট দিন। চিকিৎসকদের সর্বত চেষ্টা এবং নিজের বেঁচে থাকার সমূহ ইচ্ছা সত্ত্বেও শেষ রক্ষা হয় নি। মৃত্যুর মায়ায় পড়ে তাঁকে চিরদিনের জন্যে পাড়ি দিতে হয়েছিলে, পৃথিবীর ওপারে। যিনি বাংলা কবিতার আপাত সরল ধারায় আধুনিকতার দ্বন্দময় খর স্রোত বইয়ে দেওয়ার দায়ে সমালোচিত হয়েছিলেন বারবার। মৃত্যুর দু দিন আগে, যিনি হাঁসপাতালের বেডে শুয়ে বলছিলেন, “আকাশে দেখছি ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’র রং।“ তিনি, কবি। বাংলার চির অভিমানী কবি, জীবনানন্দ দাশ। আপাত দৃষ্টিতে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলে মনে হলেও, মৃত কবির শরীরকে কিন্তু লাশ কাটা ঘরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় নি। বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায়ের হস্তক্ষেপে, অনিবার্য ব্যাবচ্ছেদের হাত থেকে সেদিন রেহাই পেয়েছিল কবির শরীর। কিন্তু তাতে তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে কাটা ছেঁড়া করা থামেনি কোনো ভাবে। অবশ্য তার পেছনে সঙ্গত কারণ ও আছে যথেষ্ট। প্রথমত ট্রামের মত একটি ধীর গতির যানের ধাক্কায় মৃত্যুর নজির প্রায় নেই বললেই চলে। তবে নজির নেই বলেই যে ঘটবে না বা ঘটতে পারে...