সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জানুয়ারী, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কোলকাতা বই মেলা হারিয়ে দিল লন্ডন বই মেলাকে!

কোলকাতা বই মেলা বিশ্ব সেরা কি না, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করা কিংবা তথ্য-রেকর্ড ঘেঁটে আসল সত্যটাকে বার করার মত ধৈর্য বা সময় কোনোটাই গড়পড়তা বাঙালীর নেই। আত্মপ্রসাদে ভোগা বাঙালী সর্বদাই অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকবে, এতে বিস্মিত হবার কিছু নেই। তা সে স্বঘোষিত আস্ফালন, যতই অসার হোক কিংবা যুক্তি-তর্কে না টিকুক। মিথ্যে স্বপ্ন নিয়ে যুগের পর যুগ কাটিয়ে দেওয়ার অভ্যাস বাঙালীর বহু পুরনো। কিন্তু সত্যিকারের তথ্য কি অন্য কথা বলছে? তথ্যের কথা উঠলেই প্রথমে যার কথা মনে পড়ে সেই সব জান্তা গামছাওয়ালা উইকিপিডিয়ার কাছে শরনাপন্ন হতেই হয়। উইকিপিডিয়া অনুসারে, ৪৭ বছরে পড়া কোলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা কিন্তু সত্যিই বিশ্ব সেরা। সে তার বহরের দিক থেকে হোক কিংবা মেলায়া আসা লোক সংখ্যার বিচারে। একটা তথ্য এই প্রসঙ্গে দিয়ে রাখা ভালো, প্রতি বছর কোলকাতা বই মেলায় নতুন বইয়ের গন্ধ নিতে আসেন প্রচুর সংখ্যক মানুষ যার হিসেবটা প্রায় ২৫ লক্ষের মত। তা সত্ত্বেও কিন্তু একটা কাঁটা আছে, কাঁটাটা বই মেলায় হওয়া বইয়ের বাণিজ্যকে ঘিরে। কারণ বাণিজ্যের প্রশ্নে কোলকাতা বই মেলা কিন্তু তার বিশ্ব সেরা তকমা ধরে রাখতে পারছে না। বরাবরের লক্ষ্মীছাড়া বাঙালী কবে...

নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসঃ এক ওড়িয়া যুবকের গল্প!

সুভাষ বোস বাঙালি হয়েছেন ১৭ বছর বয়সে। নেতাজী হয়েছেন তারও অনেক পরে। সাধারণ জনমানসে , সুভাষের সঙ্গে ওড়িশার, বিশেষ করে ওড়িশার কটক শহরের সম্পর্ক, শুধুই সুভাষের জন্মস্থান হিসেবে। এ কথ া ঠিক ১৮৯৭ সালের ২৩ শে জানুয়ারি, কটকের ওড়িয়া বাজার অঞ্চলে যে পেল্লাই দো-তলা বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন সুভাষের বাবা  জানকীনাথ বোস, সেই বাড়িতেই মা প্রভাবতী দেবীর কোল আলো করে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন ভারতের এই বীর, মহান সন্তান। কিন্তু প্রায়শই আমরা ভুলে যাই জন্মের পরে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সুভাষকে একটু একটু করে নেতাজী করে গড়ে তোলার পেছনে কটকের জলহাওয়ার অবদান কতটা! মহানদীর তীরে বসা কটক শহর, ভারতবর্ষের প্রাচীনতম শহরগুলির মধ্যে অন্যতম। ১৯৪৮ সালে, ভুবনেশ্বরে স্থানানন্তরিত হওয়ার আগে অবধি, কটকই ছিল ব্রিটিশ শাসনাধীন ওড়িশা রাজ্যের রাজধানী। পরবর্তী কালে প্রশাসনিক অনেক কার্যালয় ভুবনেশ্বরে সরে গেলেও, ওড়িশার উচ্চ আদালত এখনও পর্যন্ত রয়েছে কটকেই। যে আদালতে ওকালতি করতেন সুভাষের বাবা। প্রখ্যাত আইনজীবী জানকীনাথ বোস তাঁর পৈতৃক ভিটে কোলকাতা সংলগ্ন, চাঙড়িপোতা, কোদালিয়া (বর্তমানে, সুভাষগ্রাম) থেকে ১৮৮০ সালে চলে আসেন কটক শহরে। সেখানেই জন্...

মদ্যপ শক্তি কথা!

  স্তন্যপায়ী বলে প্রানীদের একটি শ্রেনীবিভাগ আছে। কবিদের মধ্যে সেরকম কোনো শ্রেণীকরণের নাম কেউ কখনো শুনেছে বলে মনে করা শক্ত। কিন্তু কল্পনা শক্তির আর একটু বিস্তার ঘটিয়ে যদি ভাবা যায় তাহলে মদ্যপায়ী বলে একটা শ্রেনীর সন্ধান পাওয়া গেলেও পাওয়া যেতে পারে। যদিও বিরল সেই শ্রেনীর সূচনা হয় যে ব্যক্তিকে দিয়ে, অবলুপ্তিও ঘটে যায় ওই ব্যক্তিরই জীবনাবসানের সঙ্গে সঙ্গে । ব্যক্তিটি আর কেউ নন, তিনি হলেন এক এবং একমাত্র, কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়। তবে মধ্যপায়ী। যিনি মদ্যপান করেন কোনো উপলক্ষ ছাড়াই, শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার মত। হয়তো একটু ছোট মুখে বড় কথা বলা হয়ে গেল। আসলে শক্তির মদ্যপানের কথা আর শুধু কথা নেই, রূপকথায় পরিণত হয়ে গেছে। শক্তির মদ্যপানের মিথ বোধহয় আর কোনো কৃতি কবির পক্ষে, অতীতে তো হয়ইনি ভবিষ্যতেও কোনোভাবে ভাঙা সম্ভব বলে মনে হয় না । হয়তো সেই কারণেই আজও কোনো তরুন কবি মদের গেলাস হাতে শক্তির মতই বোহেমিয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু কবি সুবোধ সরকারের কথায় ফুটে ওঠে অন্য কথা - স্বপ্ন যে কেউ দেখতে পারে, কিন্তু শক্তি একজনই হন, “মদ অনেকেই খায়, কিন্তু এমন কবিতা কে লিখতে পারে!”   সত্যিই তো কে এমন আছে, ট...

নররেন্দ্রনাথের সন্ন্যাস নেওয়ার গল্প!

  ১৮৬৩ সালের  ১২ জানুয়ারিতে (মকর সংক্রান্তির পুন্য তিথি) জন্ম নেওয়া নরেন্দ্রনাথ দত্ত তখন ২৪ বছরের তরতাজা যুবক।   কিন্তু তখনই তাঁর পরনে উঠেছে সন্ন্যাসীর গেরুয়া ধুতি ও ফতুয়া। এই গেরুয়া পোশাক স্বয়ং রামকৃষ্ণের মন্ত্রপূত।  সে এক গল্প। নরেন্দ্রনাথেরই গুরু ভাই গোপাল ঘোষ, যিনি বয়সে নরেন্দ্রনাথের থেকে অনেক বড়, রামকৃষ্ণের সান্নিধ্যে এসেছিলেন তাঁর হঠাৎ স্ত্রী বিয়োগের পরে। সেই গোপাল ঘোষ সেবার মকর সংক্রান্তির কয়েকদিন আগে বাজার থেকে বারো খানা ধুতি কিনে এনেছিলেন এবং সেগুলিকে গেরু মাটি দিয়ে গেরুয়া রং করে গুছিয়ে রেখেছিলেন গঙ্গা সাগরে আসা সাধুদের দেবেন বলে। কিন্তু সাধু খুজতে গঙ্গা সাগরে কেন, যখন চোখের সামনেই এত গুলো ‘ত্যাগী সাধু’ ঘুরে বেড়াচ্ছে।  গুরু রামকৃষ্ণ যেন গোপালের জ্ঞান চক্ষু খুলে দিলেন।  “ আমার এই ছেলেদের মতো ত্যাগী সাধু আর কোথায় পাবি ? এদের এক - এক জন হাজার সাধুর সমান । ” যেমন বলা তেমন কাজ। গোপাল ঘোষের গুছিয়ে রাখা বারো খানা গেরুয়া বস্ত্রকে মন্ত্রপূত করে দিলেন ঠাকুর। সঙ্গে গলায় ধারন করা রুদ্রাক্ষকেও করে দিলেন মন্ত্র শুদ্ধ। সেই যে গেরুয়া বস্ত্র পেলে...

নজরুলের মৃতদেহ নিয়ে নাটকীয় সংঘাত!

জন্মগত ভাবে ভারতীয়। মৃত্যুর পরে সমাধিস্থ হতে হল, ভিন্ন দেশে। তাও প্রাণাধিক প্রিয়, পত্নীর শেষ ইচ্ছাকে ধুলায় উড়িয়ে। জীবনের অন্তিম ক্ষণের এই ট্র্যাজেডি বোধহয় হার মানাবে কোনো রূপকথার গল্পকেও। সত্যি কথা বলতে কি, নজরুলের জীবনের শেষ তিন দশক কেটেছে নীরবতার জেলখানায়, একরকম স্বেচ্ছা বন্দী হয়ে। ১৯৭৬ এর ২৯ শে আগস্ট, তাঁর নশ্বর শরীর থেকে প্রাণ বায়ু বেরিয়ে যাওয়ার আগে অব্দি, বাংলার চির বিদ্রোহী কণ্ঠস্বর, কাজী নজরুল ইসলাম কার্যত ছিলেন মূক ও রুদ্ধবাক। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া, তাঁর আর কিছুই করার ছিল না। কিন্তু মৃত্যুর পরে, কবির মৃত দেহ নিয়ে যে অভূতপূর্ব নাটক সংঘটিত হয়েছিল ভারত এবং সদ্য জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের মধ্যে তা এককথায় নজিরবিহীন। এই নিবন্ধের প্রতিপাদ্য বিষয় প্রধানত এই নাটককে ঘিরেই। নাটকের ক্লাইম্যাক্স যদিও আসে নজরুলের মৃত্যুর পরে, কিন্তু এর সূচনা হয়েছিল তারও তিরিশ বছর আগে। নজরুলের তখন ৪৩ বছর বয়স।  ১৯৪২ এর জুলাই মাস, সেই প্রথম জানাজানি হল নজরুলের মানসিক অসুস্থতার কথা। সদা মুখর কবি যেন ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছিলেন বিস্মৃতির নীল অন্ধকারের মধ্যে। হারিয়ে ফেলছিলেন তাঁর চির বিবাগী  বাগশক্তি...