সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

নিদারুন সমাপতন, সমরেশ বসু এবং রামকিঙ্করের মৃত্যুতেও!

সাহিত্যিক সমরেশ বসু , শিল্পী রামকিঙ্কর বেজের জীবন আয়নায় দেখতে চেয়েছিলেন নিজের জীবনকে ।   নিজের জীবনের পাওয়া আঘাত গুলোকে রামকিঙ্করের জীবনের আঘাত গুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে।  কারণ সমরেশ বসু আর রামকিঙ্কর বেজ দুজনেরই প্রাথমিক জীবন ছিল দারিদ্র্য ক্লিষ্ট।  দুজনেই ছিলেন ‘ মধ্যবিত্ত ভণ্ডামি ’ র কাছে অসহায় যদিও জীবন যুদ্ধে তাঁরা কেউই পলাতক সৈন্য ছিলেন না ।  স্ব স্ব ক্ষেত্রে সফল এই দুজনের জীবনেই বিতর্কের ঢেউ বয়ে যেত কারণে অকারণে । তাই কি ‘ দেশ ’ সম্পাদক সাগরময় ঘোষের কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর না করেননি সমরেশ বসু ? এ কথা ঠিক জহুরী সাগরময় ঘোষও জহর চিনতে ভুল করেননি। সঠিক ভাবেই তিনি চিনেছেলেন সমরেশের অবচেতনের মধ্যে বসে থাকা আহত রামকিঙ্করকে । তাই দেশিকোত্তম পুরস্কারে ভূষিত ভাস্কর তথা চিত্রশিল্পী রামকিঙ্করের জীবনের ওপর উপন্যাস লেখার প্রশ্নে সমরেশ কেই তিনি রেখেছিলেন তাঁর বিবেচনার শীর্ষে । সমরেশ বসু তারপরে দীর্ঘ দশ বছর লাগিয়ে দেন , শিল্পী রামকিঙ্কর কে পুরোপুরি আবিষ্কার করতে । এখানে একটু বলে নেওয়া ভালো যখন সমরেশ লেখা শুরু করার ব্যাপারে মনস্থির করেছেন তখন...

কনকাঞ্চন থেকে ঘেঁটু!

ছোটোবেলা থেকে এই ফুলটিকে ভেটকানি ফুল বলে জানি। পরে জেনেছি কবি জীবনানন্দের ঘেঁটু ফুল আর 'আরন্যক' বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাট ফুল আসলে আমার জানা ভেটকানিরই ভিন্ন দুটি নাম। কয়েকমাস আগে এই সময়ের এক অন্যতম কৃতি সাহিত্যিক মনিশঙ্কর মণির একটি মন্তব্যের সৌজন্যে ফুলটির ফোটার সময় নিয়েও আর কোনো অস্পষ্টতা থাকে না আমার মনের মধ্যে। ছবিটি কৃষ্ণনগরে, জলঙ্গী নদীর পাড়ে ফুটে থাকা ঘেঁটু ফুলের গত ২৯ শে অক্টোবর, ২০২৩ এ আমারই এক ফেসবুক পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য জানাতে গিয়ে মনিশঙ্কর বাবু বলেছিলেন - ঘেঁটু ফুল বসন্তের শুরুতে ফোটে, এবং গুচ্ছে ফোটে। তিনি ঘেঁটু ফুলের একটি ছবিও পোস্ট করেছিলেন। প্রসঙ্গত বলি, আমি আমার সেদিনকার পোস্টে - যার শিরোনাম ছিল 'সকালে বিকেলের ফুল' একটি নাম না জানা ফুলের ছবি পোস্ট করেছিলাম। (সেদিনকার সেই পোস্টে যা লিখেছিলাম - হলদেটে বিষন্নতায় কেমন মজে ছিল পথের ধারে ফুটে থাকা নাম না জানা ফুলগুলি। বড় মায়া পড়ে গেল। তাই ফলগুলিকে সেল ফোনের ক্যামেরা বন্দী করলাম শুধু তাই নয়, অনেক ভেবে ফুলটির নাম দিলাম, কনকাঞ্চন । দেখুন, আপনারাও পান কিনা সে স্বর্ণ বিতানের সন্ধান।) ...

অনুভূতিই আসল কবি!

এই কবি কথাটা কিন্তু বেশ গোলমেলে। অনেকটা গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মতো। প্রকৃত কবির অবশ্য তাতে কিছু যায় আসে না। সে আপনি তাকে কবি বলে মানুন আর নাই মানুন। এই প্রসঙ্গে বলি কবির থেকেও বড় গোলমেলে কবির কবি কবি ভাব। তবে প্রকৃত কবির কাছে সে ভাব তার একান্তই স্বভাবগত, কষ্ট করে বয়ে বেড়াবার বিষয় নয়। বাকিদেরকে তা ই আবার হায়ার করতে হয়। মুখোশের মতন। একজনের কাছে কবি হওয়া আর একজনের কাছে কবি সাজা। কিন্তু কাকে বলবো প্রকৃত কবি? ছোটবেলায় আমি এক বুড়ো রিক্সাওয়ালা কে দেখেছি যিনি কথায় কথায় ছড়া বানিয়ে ফেলতে পারতেন। একবার আমরা দুই ভাই এবং আমার এক পিসি তিনজনে যাচ্ছিলাম সার্কাস দেখতে। ওই দাদুর রিক্সায় চেপে। যথারীতি রাস্তায় রিক্সার প্যাডেলে চাপ দিতে দিতেই আপনমনে তিনি ছড়া কেটে উঠলেন - আমার গাড়ি এক্সপ্রেস/ দেখতে যাবে সার্কেস। সেই রিক্সা চালক - মোশলেম আলি ছিলেন আমার দেখা প্রথম কবি। রবীন্দ্রনাথের মতন পাকা চুল আর ঝোলা দাঁড়িতে সেই রিক্সা চালক কারো কাছে ছিলেন কবি দাদা, কারো কাছে কবি কাকা আবার আমাদের মতন ছোটোদের কাছে তিনি ছিলেন কবি দাদু। সাধারণ ব্যাখ্যায় যিনি কবিতা লেখেন তিনিই কবি। সে অর্থে সকল ম...

নবাব - কৃষ্ণচন্দ্র বিরোধ ও কৃষ্ণচন্দ্রের হিন্দু পোস্টার বয় হয়ে ওঠা নিয়ে বিতর্ক!

  রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সঙ্গে বাংলার নবাবের বিরোধের কথা সর্বজনবিদিত। ১৭৫৪ সালে মুর্শিদাবাদের নবাব আলিবর্দি খাঁয়ের হাতে এমনকি বন্দী পর্যন্ত হতে হয়েছিল রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে, যা নবাব এবং রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের মধ্যেকার তিক্ত সম্পর্কের কথাই স্পষ্ট করে ।  ঘটনাচক্রে সেবার কৃষ্ণচন্দ্র, মুর্শিদাবাদ থেকে নবাবের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে কৃষ্ণনগরে ফিরছিলেন জলপথে, বজরা থেকেই শারদীয় দুর্গাপূজার বিসর্জনী কাঁসর ঘণ্টা ও ঢাকের ধ্বনি শুনতে পান তিনি এবং সেবারের মতো দুর্গা পুজায় অংশগ্রহণ না করতে পারার মনোবেদনায় ভীষণ কাতর হয়ে পড়েন। তবে সেই বিজয়া দশমীর রাত্রেই এক রক্ত বর্না, চতুর্ভুজা দেবীর স্বপ্নাদেশ পান কৃষ্ণচন্দ্র। যা পেয়ে কৃষ্ণচন্দ্র পরবর্তী শুক্লা নবমীতেই দুর্গার আর এক রূপ দেবী জগদ্ধাত্রীর পূজার আয়োজন করেন রাজপ্রাসাদের ঠাকুর দালানে ।  সেই থেকে বাংলায় শুরু হয় জগতের অধীশ্বরী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা। আজও কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রীর কেবল নবমী পুজোই হয়, এবং নবমী অন্তে দশমীর ভোরে জলঙ্গির জলে বিসর্জন দেওয়া হয় মাতৃমূর্তিকে। প্রসঙ্গত রাজবাড়ির ঠাকুর দালানের প্রবেশপথে জগদ্ধাত্রী পূজা প্রচলনের এই নেপথ্য কাহিনীর কথা ছবি সহ উল্...

রাজা কৃষ্ণচন্দ্র, পলাশীর যুদ্ধে মীরজাফরের পক্ষ নিয়েছিলেন!

এই বাড়ি থেকেই শুরু হয় দুর্গা পূজার প্রচলন । এই বাড়িরই দুর্গা মণ্ডপে সর্বপ্রথম শুরু হয় জগদ্ধাত্রী দেবীর আরাধনা। অষ্টাদশ শতাব্দীর দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে এখানকার ঐতিহ্যমণ্ডিত রাজসভাতেই কবি রায় গুনাকর ভারতচন্দ্র (১৭১২-১৭৬০) অলংকৃত করে ছিলেন রাজ কবির পদ । উল্লেখযোগ্য ভাবে এই রাজসভায় রাজ কবি থাকা কালীনই ভারতচন্দ্র রচনা করেন তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘অন্নদামঙ্গল’।  আর যার কথা না বললে বাংলা কৌতুক সাহিত্য প্রায় অনাথ হয়ে পড়ার উপক্রম হয় সেই গোপাল ভাঁড়েরও প্রাণ ফাটা হাস্য রস লীলা নির্মাণের সুউর্বর ক্ষেত্র ছিল এই রাজবাড়িরই রাজদরবার। যদিও গোপাল ভাঁড়ের বাস্তব অস্তিত্ব নিয়ে দ্বিমত আছে কিন্তু সে কথায় পরে আসছি।   গোপাল ভাঁড়ের নাম উঠতেই পাঠকের মনের পর্দায় নিশ্চিত ভাবে যে ছবিটি সর্বপ্রথম ভেসে ওঠে সেটি আর কারুর নয় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এবং সেই আমোদ প্রিয় এবং সংস্কৃতিতে রুচি রাখা রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজ্য পরিচালনার ভরকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সেই বিখ্যাত রাজসভার।  সৌজন্যে অবশ্যই গোপাল ভাঁড়ের কৌতুক রসের হাজারো কাহিনী সম্বলিত ছোট ছোট চটি বই যার অমোঘ টান সম্ভবত উপেক্ষা করতে পারেনা আপামর ক...