সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মে, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মদের আসরে শীর্ষেন্দু? শক্তি-সুনীলের 'গান্ধীগিরি'!

সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় নিজেকে 'সংসারে থাকা সন্ন্যাসী' ভাবতে ভালোবাসেন। ১৯৬৫ সালে যখন শীর্ষেন্দু মাত্র ৩০ বছর বয়সের তরতাজা যুবক তখনই  দীক্ষা নিয়েছেন অনুকূল ঠাকুরের কাছে।  আদ্যোপান্ত আধ্যাত্মিক শীর্ষেন্দু বিশ্বাস করেন পরজন্মে; যিনি প্রবল আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেন, “মৃত্যুর পরে সব শেষ হয়ে যায় না। আত্মার সঙ্গে থেকে যায় স্মৃতিও।”  যিনি তাঁর ভূতে বিশ্বাস থাকার কথা বলেন প্রকাশ্যে, কোনো সংকোচ ছাড়াই। এমনকি আনন্দবাজার অনলাইনে স্রবস্তি বন্দ্যোপাধ্যায় কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জোরের সঙ্গে বলেন তাঁর “ভূতের সঙ্গে বেশ কয়েকবার" দেখা হওয়ার কথা। নিশ্চিত ভাবে ঠাকুরের দীক্ষিত হওয়ার কারণে তিনি একজন নির্ভেজাল নিরামিষাহারী। বলা যায়, খান পানে তাঁর নিষ্ঠা প্রায় বাঙালী ঘরের বিধবা পিসি মাসীদের মতনই।  এ হেন শীর্ষেন্দু ভাবতেই পারেন না মদ্যপান করার কথা। কিন্তু তাই বলে তাঁর প্রবল মদ্যাসক্ত বন্ধু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কিংবা শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের সম্পর্কে কোনো চিড় কিন্তু কোনোদিন দেখা যায় নি।  আজকের নিবন্ধে আমরা খোঁজার চেষ্টা করবো ব্যবহারিক জীবনে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে থা...

কবি শ্রীজাত অভিনেতা হতে চান না!

শ্রীজাত কবি। কবিতা তাঁর নিজের ভালোলাগার জগত। কবিতা তিনি লেখেন তাঁর ভেতরের প্রণোদনা থেকে।  এই প্রণোদনা আসে অন্ধকার রুদ্ধ দশা থেকে মুক্তির আলোকরেখা হয়ে। তখন তাঁকে কলম ধরতেই হয়। শ্রীজাত আবার গীতিকার ও। ভারতবর্ষে কবি থেকে গীতিকার হয়েছেন অনেকেই। জাভেদ আখতার থেকে গুলজার; ছায়াছবির সফল গীতিকার হিসেবে বাংলার শ্রীজাত এই সংখ্যার নবতম সংযোজন। বাংলা ছবি ‘মিশরের রহস্য’ এ গান লিখে তিনি সেরা গীতিকার হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরষ্কারে ভূষিতও হয়েছেন ২০১৪ তে।  বলা যায়, শ্রীজাত এসময়ের একজন সফল গীতিকার।  কিন্তু শ্রীজাত তাঁর গীতিকার সত্তার থেকে কবি সত্তাকেই বেশী এগিয়ে রাখতে চান।  কারণ কবিতা তিনি লেখেন নিজের শর্তে।  যেখানে গান তাঁকে লিখতে হয় অন্য কারুর কথা মেনে।  শ্রীজাত, এ কথা বলেছেন  কোলকাতা লিটারেরি ফেস্টিভ্যাল এর এক আলোচনাচক্রে। গান লেখার আগে গানের সুর, চিত্রনাট্য এমনকি কোন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর উপর সেই গানের দৃশ্যায়ন হবে এই সব ছোট ছোট বিষয়গুলোকেও তাঁকে মাথায় রাখতে হয়। কিন্তু কবিতা তাঁর একান্ত নিজস্ব।     কবিতার পাতায় তাই তিনি অনায়াসে লিখতে পারেন – এতই যদি ক্...

খরতাপে ছায়া যাপন!

অবাধ্য গরমে জীবন যখন ধূধূ, মরু-সমান তখন মরুদ্যানের সন্ধান তো থাকবেই। প্রচন্ড সূর্য স্বৈরাচারের দিকে তাকিয়ে ক্রমশ সরু হয়ে আসা আম মানুষের দুই চোখে তো ফুটে উঠবেই ছায়ার আকুল আকাঙ্খা। মরুদ্যান - তাও যে মরিচীকা। প্রখর মধ্যাহ্নে, ছায়ার ছ না থাকা পিচ ঢালা পথে যেমন সহৃদয় প্রকৃতি ছলনাই সই ছড়িয়ে দেয় ছলছল জলের জাদুবাস্তবতা এবং বারবার তার ব্যাকূল মায়ায় ফেলে মারীচ রূপী মায়া মৃগের মতো ধেয়ে চলে যায় দূরে আরও দূরে। অপূর্ণ থেকে যায় তাকে পরখ করে দেখার চির দুর্দমনীয় মনের অলীক ছায়া যাপনের নাছোড় কামনা। গ্রীষ্মকাল হোল রবিকাল। আর রবিকালের রবি যে অপরাজেয় হয়ে থাকতে চাইবে, সেটাই স্বাভাবিক। ঘন কাঁঠাল পাতার কৃষ্ণকায় সবুজ ছায়ার মত মেঘের সামান্যতম উদয়াভাস ও যে তার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই তাপমাত্রা, দিনে দিনে মাত্রা ছাড়া। পূর্বের সকল রেকর্ড ডুবিয়ে আকাশের সূর্য যেন তার তাপ প্রবাহের অত্যচারী অগ্নি বলাকাকে উড়াবেই উষ্ণতার এভারেস্টে। কার কি করার আছে! হয়তো বা আছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের পাঠ পড়ানো মাস্টার মশাইরা তাদের সিক্স প্যাক দেখিয়ে এবার তো বলবেনই দেখেছেন তো আগে থেকে সাবধান হতে বলেছিলাম। যথ...

তারাশঙ্করের শক্তিই তাঁর নোবেল প্রাপ্তির পথে প্রধান অন্তরায়!

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর লেখা উপন্যাস, ছোট গল্প সবেতেই ভীষণ ভাবে ছড়িয়ে থাকে রাঢ় বাংলার প্রান্তিক ও অন্ত্যজ সম্প্রদায়ের মানুষের কথা। দুলে, বাগদী, সাঁওতাল, কাহার, বাউরি, বোষ্টম প্রভৃতি পিছিয়ে পড়া মানুষের সুখ দুঃখ, প্রেম, লড়াই, আপোষ, অভিমান, ক্ষোভ, আবেগ ইত্যাদি কিভাবে বদলে ফেলে সমাজ জীবনের প্রবহমান সুরকে তারই দরদী ও সংবেদনশীল অনুসন্ধান কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে দেখা যায় তারাশঙ্করের অধিকাংশ কালজয়ী কাহিনীর ঘটনাপ্রবাহ কে।  যার উজ্জ্বল নজির ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’, ‘কালিন্দী’, ‘মন্বন্তর’ ‘নাগিনী কন্যার কাহিনী’, ‘গনদেবতা’ বা ‘রাধা’ র মতো অমর উপন্যাস । রাঢ় বাংলার প্রান্তিক জনপদ - বীরভুমের লাভপুর। যেখানে তারাশঙ্করের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। লাভপুরের জল হাওয়ায় সম্পৃক্ত তারাশঙ্করের উপন্যাসে তাই পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবন যাত্রার ছবি কখনোই কষ্ট কল্পিত বা আমদানি কৃত মনে হয় না।  উপন্যাসের চরিত্রদের মুখের ভাষা খোয়াইয়ের লাল মাটির মতোই অকৃত্রিম এবং সহজাত লাগে। তারাশঙ্করের রচনার বৈভবও সম্ভবত এই প্রান্তিক মানুষদের জটিলতা হীন জীবন যাপনের সহজিয়া ভাবের মধ্যেই নিহিত থাকে।  তাদের মুখের ভাষার মধ্যেই অন...

রবীন্দ্রনাথের টিনেজ লাভ!

সাত থেকে সতেরো, বৌঠান কাদম্বরীর প্রতি তাঁর অসংজ্ঞায়িত আকর্ষণ মাধবীলতার সুবাসের মতো তাঁর অপরিপক্ক হৃদয় ভ্রমরকে প্রায়শই উদ্বেলিত করে যেত। কল্পনার বৈঠা বেয়ে আপন কৌমার্যের ভেলা কে অপরিনত কৈশোরের বেলাভূমির বিপ্রতীপে থাকা যৌবনের উথাল পাথাল সাগরে ভাসাতে চেয়ে থেকে থেকেই তাঁর বুক কেপে উঠত আমলকি পাতার মতন।   কিন্তু প্রশ্ন হোল রবীন্দ্রনাথের টিনেজ লাভ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সতেরোর গণ্ডি টানা কেন! সাধারণত টিনেজ বলতে বারো থেকে উনিশের মধ্যে বয়সসীমাকে ধরা হয়। তাহলে কি রবীন্দ্রনাথের জীবনে টিনেজ লাভ বলতে যা বোঝায় তা এসেছিলো সতেরোর পরে?   এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের আর একটু অপেক্ষা করতে হবে। তার আগে দেখে নেওয়া যাক বৌঠান কাদম্বরীর সঙ্গে তাঁর বহুল কথিত সম্পর্কের রসায়ন কিভাবে তাঁকে তাঁর বয়সন্ধির উত্তাল এবং আবেগ উৎক্ষিপ্ত সময়ের জন্য একটু একটু করে প্রস্তুত করে তুলেছিলো। যদিও তাঁদের সম্পর্কের শুরু হয়েছিল কৈশোরের অনেক আগেই। রবীন্দ্রনাথের যখন সাত বছর বয়স তখন তাঁর থেকে দু বছরের বড় কাদম্বরীর পদার্পণ ঘটে রবীন্দ্রনাথের জীবনে।   যে কথার উল্লেখ শুরুতেই করেছি।   তাই সতেরো-উত্তর ঘটনা পর্বে যাওয়ার আগে ...