সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

রবীন্দ্রনাথের চোখে বিদ্যাসাগর এবং দুজনের প্রথম সাক্ষাৎ!

রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং যাকে আদিকবির আখ্যায় ভূষিত করেছেন, যার লেখা বইয়ের (বর্ণ পরিচয়) হাত ধরে তাঁর প্রথম পরিচয় বাংলা বর্ণ যোজনার সঙ্গে, মাত্র চার বছর বয়সে পড়া যার লেখার প্রভাব থেকে কোনোদিন পারেননি মুক্ত হতে, ৫১ বছর (১৯১২) বয়সে লেখা 'জীবন স্মৃতি' তে তাই যার লেখার কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন ‘জল পড়ে, পাতা নড়ে’ র মত বাংলা কাব্যের ইতিহাসে চির কালজয়ী দুটি লাইন সেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল মেট্রোপলিটন স্কুলে।   ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিদ্যাসাগর তখন মেট্রোপলিটন স্কুলের সভাপতি আর সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রামসর্বস্ব ভট্টাচার্য ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সংস্কৃত ভাষার গৃহ শিক্ষক। রামসর্বস্ব পণ্ডিত ছোট্ট রবীন্দ্রনাথ কে ‘ম্যাকবেথে’র বাংলা অনুবাদ  করে শোনাতেন, আর তা শুনে বাংলায় লিখিত তর্জমা করতে হত রবীন্দ্রনাথকে। তর্জমা সম্পূর্ণ হলে তার গুনমান বিচার করতে রামসর্বস্ব ছাত্র রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে শরণাপন্ন হলেন বিদ্যাসাগরের কাছে। কেমন ছিল সেই প্রথম সাক্ষাৎ পর্ব! রবীন্দ্রনাথ তার আত্মজীবনী ‘জীবনস্মৃতি’ তে সে কথা লিখেছেন বিস্তারিত। ‘জীবন স্মৃতি’র ‘ঘরের পড়া’ অধ্যায়ে লেখা সে কাহ...

রবীন্দ্রনাথ নয়ঃ গান্ধীজীকে কে সর্বপ্রথম মহাত্মা উপাধি দিয়েছিলেন?

  রবীন্দ্রনাথ এবং গান্ধীজী হচ্ছেন তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে একেবারে শীর্ষে থাকা দুই ব্যক্তিত্ব । অনেকটা ফুটবলের মারাদোনা বা ক্রিকেটের শচিন তেন্ডুলকর এর মতো । স্ব স্ব ক্ষেত্রের চুড়ায় অধিষ্ঠিত এই দুই মহান মানুষের মধ্যে সখ্যতাও ছিল চুড়ান্ত । দুজনেই পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সম্মানের প্রশ্নে একে অপরকে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপায় অভিষিক্ত করেছেন বারেবারে । গান্ধীজী রবীন্দ্রনাথকে আখ্যায়িত করেছেন ঋষি তুল্য গুরুদেব রূপে তো রবীন্দ্রনাথ গান্ধীজীকে মহাত্মা আখ্যায় ভূষিত করেছেন ।       শান্তিনিকেতনে গান্ধীজী ও রবীন্দ্রনাথ। যদিও রবীন্দ্রনাথই গান্ধীজীকে প্রথম মহাত্মা উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন বলে যে প্রচলিত বিশ্বাস তা কিন্তু কোনোকালেই প্রশ্নের উর্ধে ছিল না, বিশেষ করে এলিট বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের মধ্যে গোড়া থেকেই এই নিয়ে দ্বিমত ছিল। আম জনমত অনুসারে ১৯১৫ তে লেখা একটি চিঠিতে রবীন্দ্রনাথই সর্বপ্রথম গান্ধীজীকে মহাত্মা বলে সম্বোধন করেছিলেন, মোটের ওপর সেটাই সবার কাছে মান্যতা পেয়ে এসেছে।  কিন্তু তর্কের খাতিরে এই চিঠিকেই যদি প্রামাণ্য হিসেবে ধ...

জনগণমনঃ জাতীয় সঙ্গীত হয়ে ওঠার ইতিহাস ও কিছু প্রশ্নের উত্তর!

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ব্রহ্ম সঙ্গীত ‘ জনগণমন অধিনায়ক’ কে দেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মান্যতা দেওয়ার সর্ব সম্মীলিত সিদ্ধান্ত হয় ১৯৫০ সালের ২৪ শে জানুয়ারি । কিন্তু কেন এত দেরী? দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও কেন তিন বছর সময় লেগেছিল জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচন করতে? ‘ভারত বিধাতা’ শিরোনামে লেখা, স্বদেশ পর্যায় ভুক্ত (গীতবিতান অনুসারে) এই রবীন্দ্রগীতিটি কিভাবে -  দেশের জাতীয় সঙ্গীত হওয়ার পথে একটু একটু করে এগিয়ে গেল! ‘জনগনমন’র জাতীয় সঙ্গীত হয়ে ওঠার নেপথ্য কাহিনীই আজ আমরা ফিরে দেখবো এই প্রবন্ধে।  ১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্ট - দীর্ঘ ২০০ বছর ধরে পরাধীনতার কৃষ্ণ কাল অতিক্রম করার পরে অবশেষে দেশবাসীর ভাগ্যাকাশে এসে উপস্থিত হোল বহু আকাঙ্খিত সেই দিনটি। উদিত হোল স্বাধীনতার নতুন সূর্যের।   স্বাধীন হোল দেশ। কিন্তু সদ্য ব্রিটিশ অধীনতা মুক্ত দুটি দেশ ভারত এবং পাকিস্থান তখনও পায় নি স্বতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা। ১৯৪৭ এর ১৮ই জুলাই তারিখে লাগু হওয়া ভারতীয় স্বাধীনতা আইন অনুসারে নিজ নিজ সংবিধান প্রণয়নের আগে পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্থান এই দুটি ভূখণ্ড কমনওয়েলথ দেশের অধীনস্থ দুটি অধিরাজ্য হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে পারা...

কোলকাতায় দুই চূড়া বিশিষ্ট জোড়া গির্জা গড়ে ওঠার কাহিনী!

কোলকাতা শহরের অন্যতম অনেক ঐতিহ্যশালী সৌধ যাদের মধ্যে শিয়ালদহ স্টেশন বিল্ডিং , কোলকাতা হাইকোর্ট , এমনকি জেনারেল পোস্ট অফিস এর মতো সুমহান স্থাপত্য নির্মাণেরও স্থপতি কিন্তু একজনই। তিনি - Walter B Granville.  ঊনবিংশ শতাব্দীর সেই প্রখ্যাত আর্কিটেক্টের উপরেই ভার পড়েছিল লোয়ার সার্কুলার রোডের ওপর অবস্থিত মিস্টার কোট্স এর বাগান বাড়ি ও তার সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায প্রোটেস্ট্যান্ট দের জন্য একটি সুদৃশ্য গির্জা বানানোর।  সেন্ট জেমস চার্চ, জোড়া গির্জা দায়িত্ব পেয়ে যথারীতি Granville গির্জা নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন । আনুষ্ঠানিক ভাবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছিল  - ১৮৬২ সালের ৭ই জুন। বাংলার তদানীন্তন  লেফটেন্যান্ট গভর্নর  John Peter Grant, গির্জার ভিত শিলা স্থাপন করেন।   তোরণ স্তম্ভে লেখা - সেন্ট জেমস চার্চ  একটু একটু করে বিশুদ্ধ গথিক স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত হতে থাকে গির্জাটি। চমকপ্রদ ভাবে গির্জার সম্মুখে দুটি সুউচ্চ চূড়া যা এককথায় অভূতপূর্ব ছিল , নজর কাড়লো সবার। জোড়া চূড়া চূড়া দুটির একটিতে বসানো হলো বৃত্তাকার দেওয়াল ঘড়ি। কৌনিক খিলান এবং রঙীন শার্সি আবৃত...

চেনা কিশোরের অচেনা গল্প!

বাবা মা'র পরে জীবনে যার কথা ভেবে আমার চোখে জল আসে তিনি কিশোর কুমার। তাঁর গানের গলা, গায়কী নিয়ে বলার কিছু নেই। সকলেই জানেন ভারতীয় সিনেমার নেপথ্য সঙ্গীত জগতে কি বিশাল উচ্চতায় তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। সে নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। আজকে বরং বলবো কিশোর কুমারের গায়নশৈলীর মধ্যে যে জীবন দর্শনের প্রতিফলন হতে দেখি তার কথা। সামগ্রিক ভাবে কিশোর কুমারের গানের দর্শণ নিয়ে বলতে গেলে যে কথা সর্বাগ্রে বলতেই হয় সেটা তাঁর গানের মধ্যে প্রতিভাত হওয়া অসাধারণ এক নির্লিপ্ততাতার কথা। তার গাওয়া সবধরনের গানের মধ্যেই সেটা ফুটে উঠতে দেখা যায়। লঘু চালের কমেডি গান থেকে শুরু করে ধ্রুপদী এমনকি চরম দুঃখের গানেও নিজের অনুভূতির বৈভবকে মিশিয়ে দিয়েও অবাক নির্লিপ্ততাতায় - তাকে প্রকাশ করতে পারতেন তিনি। যা এক অনবদ্য শ্রবণ সুখের অনুভব প্রদান করে মুগ্ধ শ্রোতার কানে। তৈরি হয় চিরস্থায়ী, অনপনেয় অনুরণন। যেটা দিয়ে কিশোর কুমার কে আর সকলের থেকে আলাদা ভাবে চিনে নেওয়া যায় অতি সহজেই। আসলে তিনি অনন্য, চির উদাসী এবং চির বাউন্ডুলে। ১৯২৯ এর ৪ঠা আগস্ট, মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়ায় এক প্রবাসী বাঙালী পরিবারে জন্ম হ...