সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

নভেম্বর, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

রবীন্দ্রনাথের দাড়ি বিড়ম্বনা!

রবীন্দ্রনাথ যে সুদর্শন ও সুঠাম শরীরের অধিকারী ছিলেন সে কথা বোধহয় ঘুরিয়ে বলার দরকার নেই।  বিদেশীদের কাছে তিনি ছিলেন সাক্ষাৎ প্রভু যীশুর মুখ। দেশীয়দের মধ্যেও কেউ কেউ তাই মনে করতেন। যেমন কবি নবীনচন্দ্র সেন, যিনি বলেছিলেন - কবির মুখাবয়ব দেখলে চিত্রিত খ্রিস্টের মুখ মনে পড়ে, যা বিশেষ ভাবে প্রণিধানযোগ্য এ ক্ষেত্রে। কিন্তু ওরকম সজনে ফুলের মত সাদা শশ্রুগুম্ফ মণ্ডিত মুখাবয়ব কেবল আমাদের পুরানের সময়কার মুনি ঋষিদের মুখের সঙ্গেই তুলনীয় । শুধু একটা বৈপরীত্য ছাড়া। রবীন্দ্রনাথের চুল ছিল মাথার মাঝখানের সিঁথি দিয়ে দুদিকে কানের ওপর আঁচড়ে টেনে নিয়ে আসা কোঁকড়ানো, বাবরী চুল। সেখানে মুনি ঋষিদের জটাজুট থাকতো, মাথার তালুর ওপরে খোঁপার মত, কুণ্ডলীকৃত । আধ্যাত্মিক চেতনায় সমৃদ্ধ মহাত্মা গান্ধী , সেই জন্যই বুঝি প্রথম দর্শনে রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব বলে সম্বোধন করেছিলেন। অত্যন্ত স্টাইল সচেতন রবীন্দ্রনাথ যিনি ব্যক্তির স্টাইলকে তাঁর মুখশ্রীর সঙ্গে তুলনা করছিলেন ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাসে, তিনি নিজে তাঁর ওই পুরানীয় মুনিঋষি মার্কা মুখশ্রীর ব্যাপারে কতটা সচেতন ছিলেন? এর উত্তর হোল, ছিলেন; বলা যায় – খানিক বেশিই ছিলেন।  এ...

সাহিত্যই লেখে প্রকৃতির সহজ পাঠ!

সাধারনের চোখে , প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য যে মুগ্ধতার আবেশ রচনা করে তা তাদের অনুভবের আয়নায় যথেষ্ট ঝকমক করলেও তাকে ভাষায় ব্যক্ত করতে পারে না সাধারণ মানুষ। প্রকৃতির অপরুপ রূপের বিচ্ছুরনকে শব্দ দিয়ে প্রকাশ করতে তাই সাহিত্যের  ভাষাই একমাত্র মাধ্যম।  যে ভাষায় প্রকৃতির অনুপম সৃষ্টি মহিমাকে নিরন্তর অনুবাদ করে চলেন কবি ও সাহিত্যিকেরা। করে তোলেন সাধারনের পাঠ যোগ্য।  প্রকৃতি তার অনন্য সৃষ্টি রহস্য নিরন্তর বুনে চলে পৃথিবীর আনাচে কানাচে, সর্বত্র।  এটা সত্যি যে তাকে খালি চোখে দেখা যায় এবং তার সৌন্দর্যের মধুর লীলা মনের মধ্যে এক অনির্বচনীয় ভালোলাগার আবেশও তৈরি করে কিন্তু তার মর্মোদ্ধার করার প্রশ্নে পুরো ব্যাপারটা অন্ধের হস্তি দর্শনের মতোই থেকে যায় অব্যক্ত। আর এখানেই সাহিত্যের ভূমিকা হয়ে ওঠে অপরিহার্য। সাহিত্য তার অনুপম সাবলীল ভাষায় শুধু যে প্রকৃতির পাঠোদ্ধারই করে তাই নয় তার ভাবার্থ কে সার্থক অনুবাদের মাধ্যমে করে তোলে সাধারনের বোধগম্য। । সাহিত্যের কল্যানে প্রকৃতির রহস্যময় সৃষ্টিলেখা হয়ে ওঠে প্রকৃতির সহজ পাঠ। বিগত কয়েকমাস ধরে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ইচ্ছায় আমাদের চারপাশে, যত্র তত্র ছড়িয়ে থাক...

একটু অন্যভাবে দেখা শহীদ মিনার কে!

১৫৭ ফুট উঁচু এই মিনারের সর্ব্বোচ শিখরে রয়েছে তুর্কী স্থাপত্য শৈলীর আদলে নির্মিত একটি গম্বুজ। গম্বুজের তলায় ওপর নীচে পরপর দুটি গোলাকার ব্যালকনি রয়েছে। ওপরের ব্যালকনি তে পৌঁছতে পেরোতে হবে ২২৩ খানা সিঁড়ি। ঋজু , নলাকার মিনারের গা বেয়ে উঠে গেছে সেই কালো পেঁচানো সিঁড়ি। শহীদ মিনার মিনার নির্মাণের ২০০ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে আগামী ২০২৮ সালে অর্থাৎ আর চার বছর পরে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিজয়ী মেজর জেনারেল ডেভিড ওকটারলোনীর স্মৃতি তে ১৮২৮ সালে নির্মিত হয় এই মনুমেন্ট। মূলত ১৮১৪ থেকে ১৮১৬, দীর্ঘ দুবছর ধরে চলা ইঙ্গ-নেপালযুদ্ধে গোর্খাদের হারিয়ে ইংরেজদের কথিত জয়ের পেছনে ওকটারলোনীর ভূমিকাকে স্মরনীয় করে রাখতেই এই সৌধের নির্মাণ। জে পি পার্কার ছিলেন এর মূল স্থপতি। উল্লেখযোগ্য ভাবে এর স্থাপত্য শৈলীতে কিন্তু মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলি যেমন সিরিয়া (সৌধের উপরিভাগ) , মিশর (সৌধের স্তম্ভমূল) এবং তুর্কীর স্থাপত্য শৈলীর ছাপ স্পষ্ট। স্বাধীনতার ২২ বছর পরে অর্থাৎ ১৯৬৯ সালের আগস্ট মাসে (৯ই আগস্ট) এই সৌধের নাম বদলে ওকটারলোনী মনুমেন্টের বদলে শহীদ মিনার রাখা হয় এবং সৌধটিকে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বীর শহীদদ...

ইন্দিরা হত্যার দিন রাজীব কোথায় ছিলেন?

অনেকের মনেই এই প্রশ্ন জাগে, যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে যেদিন তাঁর দুই দেহ রক্ষীর গুলিতে প্রাণ দিতে হল, অর্থাৎ ১৯৮৪ সালের ৩১ শে অক্টোবর, সেদিন কোথায় ছিলেন তাঁর বড় ছেলে রাজীব? ইন্দিরার কনিষ্ঠ পুত্র সঞ্জয় গান্ধী তখন প্রয়াত। চার বছর আগে, ১৯৮০ তে এক বিমান দূর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। তাই রাজনীতি বিমুখ রাজীব, মায়ের অনুরোধে অনিচ্ছা সত্তেও কংগ্রেস এর যুব সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তখন। শোনা যায় গুলির শব্দ পেয়ে ঘরের ভেতর থেকে ছুটে এসেছিলেন রাজীব পত্নী সোনিয়া। কিন্তু ঘটনা ঘটার সময় কি রাজীব দিল্লির প্রধানমন্ত্রী বাসভবনে উপস্থিত ছিলেন না। কোথায় ছিলেন রাজীব তখন? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আমরা বলে নেব এক অদ্ভুত নাটকীয় পরিস্থিতির কথা। যার সাক্ষী ছিল সেদিন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সমুদ্র উপকূলবর্তি মহকুমা শহর, কাঁথি। প্রসঙ্গত, কাঁথি শহরের প্রাণকেন্দ্র অর্থাৎ মহকুমা প্রশাসনিক কার্যালয়ের ঠিক দক্ষিণ মুখে রয়েছে সরকারি খেলার মাঠ, অরবিন্দ স্টেডিয়াম। স্থানীয়দের কাছে খাসমহল ময়দান। নাটকটি মঞ্চস্থ হয...

আলোর উৎসবে 'সবার নিমন্ত্রণ'!

আলোর পরশে জেগে ওঠা সে শিহরণ , বড় আকাঙ্খিত। তবু যেন চোখ তুলে তাকাতে কেমন বাধে। ভ্রু পল্লব সম পুষ্প দলে যেন কত যুগের দ্বিধা। অধোনমিত মুখে সুলগ্ন ফুলশয্যার লাজ , চুড়ান্ত বিহ্বলতার সেই ক্ষণ , অনুক্ষণ গুলোকে যেন ধরে রাখতে চায় জীবনের অমূল্য সঞ্চয় করে। আসলে সে অবর্ণনীয় অনুরণন শুধুই যে অনুভব দিয়ে শুষে নেওয়া যায় , কাছে পেয়েও তাই তো তাকে হারাতে চায় দু চোখে। রবি কবির কথায় - প্রাণ চায় , চক্ষু না চায় দশা। তবু সে শুভ্র আলোর সোহাগ তার পরতে পরতে জাগিয়ে তোলে রঙের উৎসার। ছড়িয়ে দেয় সাত রঙের বিচ্ছুরণ। বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন সেই কবে আলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা সাতরঙ্গী বাহার কে খুঁজে বের করেছিলেন। প্রমান করেছিলেন , বর্ণালীর ভিন্ন ভিন্ন সাত রঙের সম্পূর্ণ সঙ্গমেই জন্ম নেয় এক ফালি সকালের রোদের। তাই তো আমাদের পুরানেও সূর্যদেবের সাতটি ঘোড়া থাকার কথা বলা হয়েছে। সাতটি ঘোড়া আসলে বর্ণালীর সাত রঙ - বে নি আ স হ ক লা কেই নির্দেশ করে। সেই আলোর পরশেই , পান্না হয় সবুজ;   শোণিত লাল হয় চূণী;   রোদের রঙ হয় গাঢ় সোনালী আর জোছনার রঙ পেলব রূপোলী। আলোর স্পর্শেই ফুটে ওঠে শুচি শুভ্র শিউলি আবার ঝরেও ...