সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মার্চ, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মুসাম্বি মোজাইক !

স্থাপন করার শৈলীই হলো স্থাপত্য শৈলী। মানুষ যবে থেকে বাসস্থান নির্মাণ করা শুরু করেছে তবে থেকেই কোনো না কোনো স্থাপত্য শৈলীর প্রয়োগ করে আসছে। বছরের পর বছর ধরে প্রস্তর খন্ড জমতে জমতে গড়ে ওঠা পাহাড়ের চূড়া হল অসাধারণ এক প্রাকৃতিক স্থাপত্য শৈলীর নমুনা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন রাজ প্রাসাদ থেকে ধর্মীয় উপাসনালয় ; স্মৃতি সৌধ থেকে দুর্গ এমনকি সমাধি স্থল নির্মাণে বিশেষ বিশেষ স্থাপত্য সৌকর্যের ধারা গড়ে উঠতে দেখা গেছে যুগের পর যুগ ধরে। তাদের মধ্যে রোমান গথিক , ইতালীয় রেনেসাঁ , ইন্দো সেরেসানিক , ইন্দো ইসলামী ও মুঘল স্থাপত্যের নাম জগৎজোড়া। কে না জানে গম্বুজ কিংবা খিলান মনুষ্য সৃষ্ট উজ্জ্বল স্থাপত্য কীর্তি গুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ তম। আমাদের দেশের আটচালার ঘর থেকে শুরু করে সুমেরীয় এস্কিমোদের গৃহ নির্মাণ - সবেতেই স্থাপত্য প্রকৌশলের সুনিপুণ প্রয়োগ লক্ষ করা যায়। যেমন প্রচ্ছদের ছবিতে - মুসাম্বি লেবু গুলোকে , শোকেসের মধ্যে , একটার মাথায় একটা সাজিয় রাখ...

নারীত্বের অন্য মহিমা!

সকাল দশটার শিয়ালদহ স্টেশন ; কাতারে কাতারে মানুষ প্রতিনিয়ত ঢুকছে , বেরিয়ে যাচ্ছে । একটা হজঘট ভিড়ের ছবি কখনোই মুছে যায় না দৃষ্টি পথ থেকে। স্রোতস্বিনী নদীর মতন,  নিত্য বহমান থাকে -   সে অসংখ্য মানুষের অবিরত পদক্ষেপ ধারা। নিরন্তর চলমান এই ভিড়ের মাঝে খ্যাত অখ্যাত, গেঁয়ো  শহুরে,   ধনী দরীদ্র, কৌশলী বোকা কারোরই কোনো আলাদা আইডেন্টিটি থাকে না। তবু , এর মাঝেই কিছু ছবি যে কি অভূতপূর্ব তাৎপর্য নিয়ে হাজির হয় তা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। বিশেষ করে কোনো বিশেষ দিনের প্রেক্ষাপটে সেই ছবি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যে সহজে ভিড় তাকে গ্রাস করে নিতে পারে না। যেমন এই ছবিটি। এক অন্ধ গায়ক (ট্রেন সিঙ্গার) , তাঁর কাঁধে ঝুলছে স্পিকার লাগানো ভারী একটা কাঠের বাক্স। সকাল ৮টা ২০ ' র ক্যানিং লোকালে উঠেছিলেন গান করতে তালদী স্টেশন   থেকে। শিয়ালদহ এ নেমেছেন , সঙ্গে স্ত্রী , তিনি আবার বা হাত দিয়ে ক্যাসিওটাকে এমন বুকের কাছে ধরে রেখেছেন যেন সরস্বতীর হাতে ধরা বই...

রবীন্দ্রনাথের বাল্মীকি প্রতিভা ও আইরিশ মেলোডিস!

তখন সদ্য পেরিয়েছেন টিন এজ এর গণ্ডী । এর মধ্যে ১৭ বছর বয়সে প্রথম বিলেত যাত্রা এবং বিলেত থেকে পুনরায় দেশে ফেরা , তাও সম্পন্ন হয়েছে   নির্বিঘ্নে । কিন্তু কেমন ছিল রবীন্দ্রনাথের টিন এজ পেরোনোর দিন গুলি ? এই প্রসঙ্গে বলে রাখি , মাত্র ২০ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনের প্রথম , রবীন্দ্রনাথ যাকে   ‘ সুরে নাটিকা ’ বলে অভিহিত করেছিলেন , সেই ‘ বাল্মীকি প্রতিভা ’ নামক গীতিনাটকটি লিখে ফেলেছিলেন ।   ১৯ পেরিয়ে ২০ তে পা দেওয়ার সেই সন্ধিক্ষণে , রবীন্দ্রনাথের ‘ বাল্মীকি প্রতিভা ’ লেখার পেছনে কি ধরনের প্রণোদনা কাজ করেছিল সেটারই তত্ত্ব তালাশ করবো আজকের নিবন্ধে ।   কোলকাতা, রবীন্দ্রসরোবরে রবীন্দ্র মূর্তি  এই প্রসঙ্গে স্বনামধন্য আইরিশ কবি ও সুর স্রষ্টা টমাস ম্যুরের বিখ্যাত কাব্য গ্রন্থ ‘ আইরিশ মেলোডিস ’ এর শব্দ নির্ঝর এবং তার অন্তরলীন সুর মূর্ছনা যে তরুন রবীন্দ্রনাথের সমগ্র চেতনাকে ‘ বাল্মীকি প্রতিভা ’ র মতো একটি ‘ গানের সূতায় গাঁথা নাটকের মালা ’ নির্মাণে বাধ্য করেছিল সেই আখ্যানও যথেষ্ট চাঞ্চল্যকর ।   ৪৯ বছর বয়সে লেখা (১৯১২ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত) তাঁর আত্মজীবনী ‘ জীবন স্ম...

রানী ভিক্টোরিয়ার নামেই কেন মেমোরিয়াল হল?

এলিজাবেথ, এডওয়ার্ড গেল তল,  শেষে ভিক্টোরিয়ার নামেই কিনা মেমোরিয়াল হল? মানছি তিনি সার্বভৌম ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের প্রথম মহিলা রাজশাসক ছিলেন। প্রসঙ্গত ভিক্টোরিয়ার পূর্বে, রানী অ্যান (১৭০২-১৪)  ছিলেন  শুধু মাত্র গ্রেট ব্রিটেনের রানী। কারন তাঁর আমলেই, ইউনিয়ন অ্যাক্ট ১৭০৭  অনুসারে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের যৌথকরন সম্পন্ন হয় এবং গঠিত হয় নতুন সার্বভৌম ইউনিয়ন যার নাম হয় গ্রেট ব্রিটেন। যদিও এর প্রায় ১০০ বছর আগে,  ১৬০৩ সালেই স্কটল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় জেমস প্রথম ইংল্যান্ড দখল করেন এবং নিজেকে গ্রেট ব্রিটেনের রাজা বলে ঘোষণা করেন।  তবে ১৭০৭ এর আইন বলবৎ হওয়ার আগে অবধি ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড পৃথক পৃথক রাজ্য হিসেবেই শাসিত হত দ্বিতীয় জেমসের বংশধরেদের দ্বারা। উল্লেখ্য অ্যানেরও পূর্বে রানী প্রথম এলিজাবেথ (১৫৫৮ -১৬০৩)  ছিলেন শুধু মাত্র ইংল্যান্ডের রানী। প্রসঙ্গত ১৮০১ সালে ভিক্টোরিয়ার ঠাকুরদা, রাজা তৃতীয় জর্জের আমলেই (১৭৬০ -১৮২০) গ্রেট ব্রিটেনের সঙ্গে আয়ারল্যান্ডের সংযুক্তিকরণ ঘটে এবং বলাই বাহুল্য রাজা তৃতীয় জর্জই হন ব্রিটিশ যুক্ত রাজ্যের প্রথম রাজা। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ...

নিজের নিজের কক্ষপথে সবাই ঘোরে!

ঘরে থাকেন ভোগী আর ঘোরে থাকেন যোগী। চিড়িয়াখানায় - ধরা পড়া জীবজন্তু আর জেলখানায় দোষী সাব্যস্ত অপরাধী মানুষ। এমনকি বৈরাগী , তাঁরও - সে হোক না বৃক্ষতল ; দিনের শেষে তিনিও ফিরে আসেন তাঁর সেই গাছতলার পর্ণ কুটিরে। যাযাবর - সেও ঘুরে ঘুরে সেই তাঁবুতেই ফিরে আসে দিনান্তে। শালিক , বাবুই , ময়না , ফিঙে তারাও বাসায় ফেরে। নিজ কক্ষে ফেরার বাসনা মনে হয় পৃথিবীর সবচাইতে আদিম বাসনা। সৃষ্টির আদি লগ্নে , সেই গাছের বাকল পরা মানুষ গুলো পর্যন্ত ক্লান্ত হয়ে গুহায় ফিরতো। তাই কক্ষে ফেরা এক অনির্বাণ ও চিরন্তন সত্য। কিন্তু ফিরতে গেলে তো একটা পথ চাই। সে পথ এবড়োখেবড়ো কি মসৃণ যাই হোক না কেন কক্ষে ফেরার একটা কক্ষপথ চাইই চাই। কক্ষচ্যুত অস্তিত্ব আসলে বিলীয়মান অস্তিত্ব। ধরুন আমরা যে গ্রহে বাস করি সেই পৃথিবীও তার কক্ষপথে থেকেই দিব্যি টিকে রয়েছে হাজার হাজার বছর। পৃথিবী আজকে যেখানে আছে , সেখানে আবারো ফিরে আসতে হয়তো সময় লাগবে ৩৬৫ দিন কিন্তু ফিরে তো আসবেই। ফিরে আসার এই অন্তহীন...