এলিজাবেথ,
এডওয়ার্ড গেল তল, শেষে ভিক্টোরিয়ার নামেই কিনা
মেমোরিয়াল হল? মানছি তিনি সার্বভৌম ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের প্রথম মহিলা
রাজশাসক ছিলেন। প্রসঙ্গত ভিক্টোরিয়ার পূর্বে, রানী অ্যান (১৭০২-১৪) ছিলেন
শুধু মাত্র গ্রেট ব্রিটেনের রানী। কারন তাঁর আমলেই, ইউনিয়ন অ্যাক্ট ১৭০৭ অনুসারে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের যৌথকরন
সম্পন্ন হয় এবং গঠিত হয় নতুন সার্বভৌম ইউনিয়ন যার নাম হয় গ্রেট ব্রিটেন। যদিও এর
প্রায় ১০০ বছর আগে, ১৬০৩ সালেই
স্কটল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় জেমস প্রথম ইংল্যান্ড দখল করেন এবং নিজেকে গ্রেট
ব্রিটেনের রাজা বলে ঘোষণা করেন। তবে ১৭০৭
এর আইন বলবৎ হওয়ার আগে অবধি ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড পৃথক পৃথক রাজ্য হিসেবেই
শাসিত হত দ্বিতীয় জেমসের বংশধরেদের দ্বারা। উল্লেখ্য অ্যানেরও পূর্বে রানী প্রথম
এলিজাবেথ (১৫৫৮ -১৬০৩) ছিলেন শুধু মাত্র
ইংল্যান্ডের রানী। প্রসঙ্গত ১৮০১ সালে ভিক্টোরিয়ার ঠাকুরদা, রাজা তৃতীয় জর্জের আমলেই (১৭৬০ -১৮২০) গ্রেট
ব্রিটেনের সঙ্গে আয়ারল্যান্ডের সংযুক্তিকরণ ঘটে এবং বলাই বাহুল্য রাজা তৃতীয় জর্জই
হন ব্রিটিশ যুক্ত রাজ্যের প্রথম রাজা।
কিন্তু শুধুমাত্র কি ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের প্রথম
রানী হওয়ার সুবাদে তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই তাঁর নামে একটা বিরাট স্মৃতি সৌধ
গড়ে তোলার কথা উঠলো। তাও কেনসিংটন রাজপ্রাসাদ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে
তদানীন্তন ভারত রাজধানী কোলকাতার গঙ্গা পাড়ে পড়ে থাকা ফাঁকা, ধূধূ করা পলি মাটির
নরম জমিকেই বেছে নিতে হল সেই কারণে! যদিও জায়গাটিতে তখন প্রেসিডেন্সি জেল ছিল, পরে সেটি আলিপুরে স্থানান্তরিত হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে যেটা স্মরণীয় সেটা হল, ভিক্টোরিয়া ১৮৩৭ সালের জুন মাসে যখন রাজ্যপাট
শাসনের ভার তুলে নিলেন নিজের কাঁধে, তখন
ভারত পারতপক্ষে ইংরেজ শাসনাধীন থাকলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত
থেকে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের কাছে ক্ষমতা তখনো হস্তান্তর হয়নি। সেটাও হয়েছিল কার্যত
রানী ভিক্টোরিয়ার আমলেই। ১৮৫৭ ‘য় সিপাহি বিদ্রোহ সামাল দিতে নাজেহাল হয়ে যাওয়া ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে, ঠিক এক
বছর পরে অর্থাৎ ১৮৫৮ সালে, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট অনুসারে আনুষ্ঠানিক ভাবে
ভারত শাসনের ভার, ব্রিটিশ রাজ পরিবার তার হাতে তুলে নেয়। কিন্তু এই প্রশ্নে
ভিক্টোরিয়া স্মৃতি সৌধ নির্মাণের যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যায় কি? এ কথা ঠিক, ভারত শাসনভার
হাতে আসার পরে, রানী ভিক্টোরিয়া কার্যত উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছিলেন নিজেকে ভারত
সম্রাজ্ঞী হিসেবে অভিষিক্ত করার লক্ষে। কারণ
ব্রিটিশ যুক্ত রাজ্যের রানী হওয়ার পাশাপাশি
অত বড় দেশ ভারতবর্ষেরও সম্রাজ্ঞী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে তাঁর
আগ্রহ ছিল অকুণ্ঠ এবং উদগ্র । অবশেষে সেটাও
সম্পন্ন হয় ১৮৭৭ সালে, রয়েল টাইটেল অ্যাক্টের মাধ্যমে। তাই রানী ভিক্টোরিয়াই ছিলেন
প্রথম ভারত সম্রাজ্ঞী।
যে কথার উল্লেখ,
কোলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের ভিত্তিপ্রস্তর ফলকের গায়ে পাওয়া যায়। রানী
আলেকজান্দ্রিনা ভিক্টোরিয়াকে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে “Victoria First
Queen-Empress of India’ হিসেবে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়, ১৯০৬ সালের ৪ ঠা জানুয়ারী। ১৯০১
সালে ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর ৫ বছর পরে। উল্লেখ্য
ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর পরে তখন রাজা হিসেবে ভিক্টোরিয়ার পুত্র সপ্তম এডওয়ার্ড
সিংহাসনে আসীন। যদিও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কাজটি সপ্তম এডওয়ার্ডের পুত্র তথা তখন
যুবরাজ (ওয়েলস) পঞ্চম জর্জের হাত দিয়ে হয়। প্রসঙ্গত এই পঞ্চম জর্জ ই পরবর্তী কালে,
১৯১০ সালে তাঁর পিতার মৃত্যু হলে ব্রিটিশ রাজ সিংহাসনে আসীন হন। এবং এক বছর পরে
অর্থাৎ ১৯১১ সালে তিনিই প্রথম রাজা যিনি দিল্লির দরবারে আসেন ভারত সম্রাট হিসেবে। এর আগে প্রথম দরবার
অনুষ্ঠিত হয় ১৮৭৮ এ, কিন্তু ভিক্টোরিয়া সেবার আসেননি। পরের দরবার, ১৯০৩ এ সেবারেও
ভিক্টোরিয়া পুত্র সপ্তম এডওয়ার্ড হাজির ছিলেন না। উল্লেখ্য ১৯১১ র জানুয়ারী মাসে
আয়োজিত দিল্লির দরবার থেকেই রাজা পঞ্চম জর্জ লর্ড কার্জনের নেওয়া বঙ্গ ভঙ্গের প্রস্তাব রদ
করার কথা ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ভারতের রাজধানীকে কোলকাতা থেকে দিল্লিতে
স্থানান্তরিত করার কথাও উক্ত দরবার থেকেই তিনি প্রথম জানান। এই প্রসঙ্গে স্মরণীয়, ১৮৯৯ সালে লর্ড কার্জনকে ভারত ভাইসরয় করে
পাঠিয়েছিলেন স্বয়ং রানী ভিক্টোরিয়া; ১৯০৫ এ বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাবের উল্টো ফল ফলাতে
তাকে ভাইসরয়ের পদ হারাতে হয়েছিল। ভিক্টোরিয়া পুত্র সপ্তম এডওয়ার্ড লর্ড কার্জনের
স্থলাভিষিক্ত করেছিলেন লর্ড মিন্টো কে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল সেই কার্জনের
প্রস্তাবকে রদ করতে লেগে গেল আরও ছয় বছর, এবং সেটা করলেন ভিক্টোরিয়া পৌত্র
রাজা পঞ্চম জর্জ। কিন্তু এ হেন লর্ড কার্জনের, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল নির্মাণের
পেছনে অবদান কিন্তু বেশ চিত্তাকর্ষক।
প্রসঙ্গত মৃত্যুর পরেই কোনো ব্যক্তির নামে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের কথা ভাবা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রানী ভিক্টোরিয়া বেঁচে থাকাকালীনই তৎকালীন ভারত ভাইসরয়য় লর্ড কার্জনের মনে এই পরিকল্পনার কথা দানা বেঁধেছিল। যদিও তিনি একটি ঐতিহাসিক যাদুঘর নির্মাণের কথাই ভেবেছিলেন প্রথমে, তার মধ্যে ১৯০১ সালের ২২শে জানুয়ারী তারিখে রানীর মৃত্যু হলে তিনি এক ঢিলে দুই পাখি মারতে ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই, ২৪ শে জানুয়ারীর দিন - ভারতের সেক্রেটারি অফ স্টেট জর্জ হ্যামিলটন কে এই মর্মে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে, সুকৌশলে রানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতির কথা উল্লেখ করে একটি সুদৃশ্য বাগান সহ বড় একটি যাদুঘর নির্মাণের প্রস্তাব পাঠান কার্জন। যদিও এর এক মাস পরে, ১৯০১ এর ২৬ শে ফেব্রুয়ারীতে, এশিয়াটিক সোসাইটি হলে তাঁর ভাষণে ‘একটি সুদৃশ্য, প্রশস্ত, জাঁকজমকপূর্ণ ভবন’ নির্মাণ কেই মূল উপজীব্য রেখেও রানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতিতেই কেন তা বানানোর প্রয়োজন তা যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কার্জন তাঁর ভাষণে আবেগ মিশ্রিত শব্দে রানী ভিক্টোরিয়ার কথা তুলে ধরেন। “তিনি সমুদ্রের ওপারে অনেক দূরে বাস করতেন, কিন্তু তাঁর হৃদয় ভারতে তাঁর প্রজাদের সাথে ছিল। তাঁর নিজস্ব জাতি এবং অন্য সকলের সাথে ভারতবর্ষের মানুষকেও একইভাবে ভালোবাসতেন তিনি।“ কার্জনের এই সভার মূল এজেন্ডা ছিল, এই উদ্দেশ্য একটি তহবিল গঠন করা। বলাই বাহুল্য তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সরকারি রাজন্য থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই উদার হস্তে দান করেছিলেন এই তহবিলে এবং প্রায় ১ কোটিরও বেশী টাকা চাঁদা উঠেছিল সেসময়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ১৯০৫ এ লর্ড কার্জনকে ভাইসরয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল নির্মাণে তাঁর অবদানের কথা ইতিহাস বিস্মৃত হয়ে পড়ে।
যে কথা শুরুতেই বলেছিলাম, কেন রানী ভিক্টোরিয়ার নামেই এমন সৌধ বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হোল!
ব্রিটিশ রাজ বংশে আরও তো রাজা এবং রানীরা ছিলেন। একটু খতিয়ে অন্বেষণ করলে বোঝা যায়, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল নির্মাণের নেপথ্যে আসলে লর্ড কার্জনের ভুমিকাই ছিল প্রধান। পাশাপাশি ভিক্টোরিয়ার জীবন আলেখ্যও ছিল নানা নাটকীয় চমকে ভরা যা নিঃসন্দেহে তাঁর নামে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের ক্ষেত্রে ভীষণ উৎসাহব্যঞ্জক ভূমিকা পালন করেছিল বলে ধরে নেওয়া যায়।
ছোটবেলায় মাত্র ১ বছর বয়সে পিতাকে হারানো
ভিক্টোরিয়া, বড় হয়েছিলেন মায়ের কড়া অনুশাসনের মধ্য দিয়ে। ১৮৩৭ এর জুন মাসে, জ্যাঠামশাই
চতুর্থ উইলিয়ামের হঠাৎ মৃত্যু হলে, ভিক্টোরিয়ার সামনে খানিকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই ব্রিটিশ যুক্ত সাম্রাজ্যের রানী হওয়ার খবর এসে
পৌঁছায়। ১৮১৯ সালের মে মাসে জন্ম হওয়া, ভিক্টোরিয়া তখন নেহাতই অষ্টাদশী তরুণী। সেই
থেকে আমৃত্যু তিনি ছিলেন ব্রিটিশ রানী এবং
প্রথম ও শেষ ভারত সম্রাজ্ঞী। বহু ঐতিহাসিক দিকচিহ্ন বিশিষ্ট ঘটনার ঘনঘটায়
ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকাল ছিল বৈচিত্র্যে ভরা এবং বিশেষ ভাবে স্মরণীয়। প্রসঙ্গত মৃত্যুর পরেই কোনো ব্যক্তির নামে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের কথা ভাবা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রানী ভিক্টোরিয়া বেঁচে থাকাকালীনই তৎকালীন ভারত ভাইসরয়য় লর্ড কার্জনের মনে এই পরিকল্পনার কথা দানা বেঁধেছিল। যদিও তিনি একটি ঐতিহাসিক যাদুঘর নির্মাণের কথাই ভেবেছিলেন প্রথমে, তার মধ্যে ১৯০১ সালের ২২শে জানুয়ারী তারিখে রানীর মৃত্যু হলে তিনি এক ঢিলে দুই পাখি মারতে ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই, ২৪ শে জানুয়ারীর দিন - ভারতের সেক্রেটারি অফ স্টেট জর্জ হ্যামিলটন কে এই মর্মে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে, সুকৌশলে রানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতির কথা উল্লেখ করে একটি সুদৃশ্য বাগান সহ বড় একটি যাদুঘর নির্মাণের প্রস্তাব পাঠান কার্জন। যদিও এর এক মাস পরে, ১৯০১ এর ২৬ শে ফেব্রুয়ারীতে, এশিয়াটিক সোসাইটি হলে তাঁর ভাষণে ‘একটি সুদৃশ্য, প্রশস্ত, জাঁকজমকপূর্ণ ভবন’ নির্মাণ কেই মূল উপজীব্য রেখেও রানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতিতেই কেন তা বানানোর প্রয়োজন তা যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কার্জন তাঁর ভাষণে আবেগ মিশ্রিত শব্দে রানী ভিক্টোরিয়ার কথা তুলে ধরেন। “তিনি সমুদ্রের ওপারে অনেক দূরে বাস করতেন, কিন্তু তাঁর হৃদয় ভারতে তাঁর প্রজাদের সাথে ছিল। তাঁর নিজস্ব জাতি এবং অন্য সকলের সাথে ভারতবর্ষের মানুষকেও একইভাবে ভালোবাসতেন তিনি।“ কার্জনের এই সভার মূল এজেন্ডা ছিল, এই উদ্দেশ্য একটি তহবিল গঠন করা। বলাই বাহুল্য তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সরকারি রাজন্য থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই উদার হস্তে দান করেছিলেন এই তহবিলে এবং প্রায় ১ কোটিরও বেশী টাকা চাঁদা উঠেছিল সেসময়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ১৯০৫ এ লর্ড কার্জনকে ভাইসরয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল নির্মাণে তাঁর অবদানের কথা ইতিহাস বিস্মৃত হয়ে পড়ে।
যে কথা শুরুতেই বলেছিলাম, কেন রানী ভিক্টোরিয়ার নামেই এমন সৌধ বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হোল!
ব্রিটিশ রাজ বংশে আরও তো রাজা এবং রানীরা ছিলেন। একটু খতিয়ে অন্বেষণ করলে বোঝা যায়, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল নির্মাণের নেপথ্যে আসলে লর্ড কার্জনের ভুমিকাই ছিল প্রধান। পাশাপাশি ভিক্টোরিয়ার জীবন আলেখ্যও ছিল নানা নাটকীয় চমকে ভরা যা নিঃসন্দেহে তাঁর নামে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের ক্ষেত্রে ভীষণ উৎসাহব্যঞ্জক ভূমিকা পালন করেছিল বলে ধরে নেওয়া যায়।
যদিও রানী ভিক্টোরিয়া ভারত তথা কোলকাতায় কখনো সশরীরে আসেননি, কিন্তু তাঁর স্মৃতিতে নির্মিত সৌধের মাধ্যমে তিনি অমরত্ব লাভ করেছেন ভারত তথা কলকাতাবাসীর কাছে।
১, কুইন্স ওয়ে তে অবস্থিত ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল, যা গড়ের মাঠের দক্ষিণে প্রায়
৬৪ একর জায়গা জুড়ে তার নজর কাড়া স্থাপত্য সৌকর্য নিয়ে প্রায় শতাধিক বর্ষ ধরে - ব্রিটিশ শাসনের এক অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন হয়ে স্বমহিমায় বিরাজমান। ইন্দো সারাসেনিক শৈলীতে তৈরি এই তাজমহল সদৃশ
সৌধটির মূল গম্বুজ সহ সমগ্র ইমারতটিই মারকানা শ্বেতপাথর দিয়ে তৈরি এবং সর্বোপরি
তাজমহলের চেয়েও বেশী উচ্চতা (১৮৪ ফুট} বিশিষ্ট। সৌধ নির্মাণের ক্ষেত্রেও বিশেষ করে
মুল গম্বুজটির আয়তন যাতে তাজমহলের চেয়েও বেশী হয় (৬৪ ফুট ব্যাসেরও বেশী) লর্ড কার্জন, ভবনের স্থপতি উইলিয়াম এমারসনকে এই
ব্যাপারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছিলেন। যাই হোক, ভিত্তি প্রস্তরের পরে, দীর্ঘ
১৫ বছর লেগে যায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের নির্মাণ সম্পূর্ণ করতে। অবশেষে,
১৯২১ সালের ডিসেম্বর মাসে, ভবনটি উন্মোচিত হয় জনসাধারণের জন্যে। উদ্বোধন
করেন তখনকার ওয়েলসের যুবরাজ অষ্টম এডওয়ার্ড। যদিও তখন রাজা, পঞ্চম জর্জ যিনি
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তিনি কিন্তু উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে হাজির হননি, এড়িয়ে গিয়েছিলেন। কারন তাঁরই ঘোষণা
অনুসারে কোলকাতা তখন আর দেশের রাজধানী নেই। নিতান্তই একটি প্রাদেশিক রাজধানী
হিসেবে তার গরিমা বেশ খানিকটা খর্বিত। কিন্তু সে অন্য প্রসঙ্গ। লর্ড কার্জনের
প্রস্তাবিত ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল বর্তমানে ভারত সরকার অধিগৃহীত একটি সংগ্রহালয়
হিসেবে তার সুমহান স্থাপত্য সৌন্দর্য ও তাৎপর্যপূর্ণ ঐতিহাসিক মহিমার কারণে সর্বস্তরের সকল মানুষের কাছেই, পরম আগ্রহের পরিদর্শন স্থল হিসেবে বিশেষ সমাদৃত।
তথ্য সুত্রঃ
কার্জন ও স্মৃতি স্তম্ভের মাধ্যমে ইতিহাসের স্থিতিশীলতা –
দূর্বা ঘোষ
ফ্লোরাল সাম্রাজ্যঃ ভারতে ব্রিটিশ উদ্যান – হারবারট এউব্লিড
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন