সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"পথে হল দেরী" - তবে উত্তম-সুচিত্রার নয়!


পথে হল দেরী - এই লাইনটির গায়ে বেশ একটা কবিতা কবিতা গন্ধ আছে। আসলে পথে যখন দেরী হয়, তখন কেউ নিষ্ঠুর গদ্যের সুরে বলে না দেরী করে ফেললাম, এটা অনেকটা খুনির খুন করে ফেললাম বলার মত সব দোষ নিজের ঘাড়ে নিয়ে যা ইচ্ছা তাই কর, দেখি তোমার কত বুকের পাটা ধাঁচের। সবাই বলে, দেরী হয়ে গেল। ভাববাচ্যে। মানে দেরী কেউ করে না। দেরী হয়ে যায়। অনিচ্ছাকৃত।
 বাংলার চলচ্চিত্র ইতিহাসে প্রথম রঙিন ছবি মুক্তি পেল ১৯৫৭ সালে্র ৫ই ডিসেম্বর। প্রথমে নির্বাক সাদাকালো (বিল্বমঙ্গল, ১৯১৯), তারপর যদিও বা বোল ফুটল (জামাইষষ্টি, দেনাপাওনা- ১৯৩১)  রঙের ছোঁয়া পেতে পেতে দেরী হয়ে গেল এতগুলো বছর। অর্থাৎ, বাংলা ছবির সাদাকালো থেকে রঙিন হওয়ার 'পথে হল দেরী'। মনে হতে পারে, এই কারনেই বুঝি এই ছবির নাম হয়ে গেল "পথে হল দেরী"। তাই কি? এটা কিন্তু আমার নিজস্ব অভিমত, কাকতালীয় ভাবে এই ঐতিহাসিক বিলম্ব কাটিয়ে যে ছবিটি প্রথম রঙিন ছবি হিসেবে মুক্তি পেল তার এমন নামকরনের প্রশ্নে যেন এই বিলম্বেরই সরল স্বীকারোক্তি আছে বলে মনে হতে পারে। যাই হোক, এর কোন দায় কিন্তু ছবির কাহীনিকার প্রতিভা বসুর ওপর বর্তায় না। আসলে তিনি এবং পরিচালক বিভূতি লাহা (অগ্রদূত) কি কারণে শেষ পর্যন্ত ছবিটির এ হেন নাম দিতে সম্মত হলেন সেটা একটু গবেষণার ব্যাপার। তবে ভয় পাবেন না। আমি কোনো ভাবে ছবির কাহিনীর মধ্যে ঢুকে নামের যথার্থতা খোঁজার চেষ্টা করবো না। নিদেন পক্ষে এটাও বোঝার চেষ্টা করবো না যে এই ছবিতে হিরোর ভূমিকায় থাকা উত্তম কুমারের জন্য নায়িকা সুচিত্রা সেনের দেরী হয়েছিল না সুচিত্রা সেনের জন্য উত্তম কুমারের। এই সূত্রে কোনোরূপ গবেষণা তো দুরস্ত সামান্যতম কোনো বিশ্লেষণেও আমি যাব না। কারণ এই ব্যাপারে আমার ভীষণ রকম দুর্বলতা আছে। ভয় আছে, সেটি প্রকাশ না হয়ে পড়ে। তাই শিরোনামেই আমি একেবারে দুধ কা দুধ পানি কা পানি করে জানিয়ে দিয়েছি পথের এ বিলম্ব কোনো ভাবেই উত্তম-সুচিত্রার নয়। 
যাই হোক, এর অনেক দিন পর প্রাক-শারদীয়ায় প্রবাদপ্রতিম গায়ক-সুরকার রাহুল দেব বর্মণ, গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের কথায় একেবারে উজাড় করা আবেগে গাওয়া সেই গান দিয়ে মাত করে দিয়েছিলেন সেবার পূজার বাজার। "যেতে যেতে পথে হল দেরী, তাই তো- যেতে পারি নি"। এখানেও সেই একই ফিরিস্তি, দেরী হয়ে গেল, কিন্তু যার জন্য আমার কোনো দায় নেই।
আচ্ছা, দেরী করলে সবাই এত দার্শনিক বা নিদেন পক্ষে এত ভাবুক হয়ে ওঠে কেন। এই প্রসঙ্গে একটা নয় দুটো মজার গল্প সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করব।
একটা আমার বাবার কাছ থেকে শোনা। গল্পটা এক ঘটকের। তো ঘটক মশাই, বেশ দায়িত্বপরায়ণ মানুষ। তিনি সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন পাত্রের বাড়ির উদ্দেশ্যে। পাত্রীর বাড়ি থেকে লোকজন আসবেন পাকা কথা বলতে। খবরটি আগে ভাগে জানিয়ে দিতে না পারলে, দশ বারো জন লোকের আহারাদির ব্যবস্থা করতে হবে তো। পাকা কথা বলে কথা। আয়োজনের প্রস্তুতি সময় মত না সারতে পারলে দুই পক্ষেরই অস্বস্তি। তো দুপুরের কিছু আগে, পাত্রীর বাড়ি থেকে লোক জন তো এসে হাজির। তার মধ্যে আবার গ্রামের যে মোড়ল, যিনি আবার তাঁর বদমেজাজের জন্য ভারী কুখ্যাত, তিনিও এসেছেন বেশ ধোপদুরস্ত হয়ে। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু পৌঁছানোর পর তো সবাই ভীষণ অপ্রস্তুত। কারণ কোথায় কি? নিত্য গেরস্থালীর রোজনামচা ছাড়া কিছুই নেই। আশ্চর্য, ঘটক তাহলে কোথায়? যাই হোক, পাত্রের বাড়ি থেকে প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করে অপরাহ্নের পড়ন্ত বেলায় যখন দুই পক্ষ বিবাহের দিন ক্ষণ নিয়ে কথাবার্তা চালাচালি করছে, ঘটক মশাই হাঁপাতে হাঁপাতে এসে হাজির। ওকে দেখে, ক্ষিপ্ত মোড়ল তো এই মারেন কি এই মারেন। চার পাঁচ জন তাঁকে টেনে সামলাতে পারেন না, মেরে দেয় আর কি। ঘটক কোনো মতে মোড়লের পায়ে পড়ে হাউ মাউ করতে করতে বলে, আমি ইচ্ছে করে দেরী করিনি । তাড়াতাড়ি পৌঁছব বলে, গাঙ চাত (সমুদ্র সৈকত) দিয়ে হাঁটতে গিয়েই গেরো হয়ে গেলো আমার। "কি হল, কি হল?" বলে সবাই তখন ঘটকের মুখের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে। "একে বৈশাখ মাস, তাও আবার ভোরবেলা, কি বলব - ফুরফুরে জলো হাওয়ায় নিদ্রা দেবী আমার ঘাড়ে একেবারে চেপ্পে বসেছিল গো দাদা, আমার কোনো দোষ নাই। কি যে হল, আমি হাঁটছি তো হাঁটছি। যখন ঘুম ভাঙল তখন দাদা, অনেকটা দূরে চলে গেছি। এখন দৌড়োতে দৌড়োতে আসছি তাই।"  বলা শেষ করে চাঁদ মুখের কি শোভা! 
পরের ঘটনাটা আমার ইংরেজির স্যার অমলেশ মিশ্রের মুখ থেকে শোনা। স্যার একবার তাঁর বাইকে চেপে সতীর্থ মাস্টারমশাইয়ের বাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে যাচ্ছিলেন। দুপুরে অনুষ্ঠান। যাওয়ার পথে তাঁর পরিচিত এক দর্শনের অধ্যাপককে এক দৃষ্টিতে ঘুঁটে মারা এক পাঁচিলের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন বটে। তখন যাওয়ার তাড়ায় তিনি চলে গেছেন। যথারীতি, ঘণ্টা দুয়েক পরে, যখন তিনি ফিরছেন, তখনো দেখেন ভদ্রলোক ঠায় ওখানে একই ভাবে দাঁড়িয়ে। এবার স্যার বাইক থামিয়ে, ব্যাপারটা কি হল বলে, সটান অধ্যাপক মশাইয়ের কাঁধে হাত দিয়ে যেই না একটা হালকা ঝাঁকুনি মত দিয়েছেন, তিনি তো একেবারে থর থর করে কেঁপে উঠে, কে, কে বলে গোল বাঁধিয়ে দেন আর কি। যাই হোক  একটু ধাতস্থ হওয়ার পর, স্যার যখন জানতে চাইলেন ব্যাপারটা কি, অধ্যাপক মশাই তো একেবারে কাঁচুমাচু অবস্থা। বুড়ো মানুষ ননী চুরি করে খেতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়ে গেলে যেমন হয় আর কি। "আপনি এতক্ষণ এখানে দাঁড়িয়ে কি দেখছেন, দাদা?" "কি বলবো, অমলেশ," অধ্যাপক তো লজ্জায় প্রায় অধোবদন।  স্যার বললেন, "বলুন না দাদা"। "সঙ্কোচ করবেন না, বলুন"। তাও অধ্যাপক মুখ খুলতে চান না কিছুতেই। স্যারও নাছোড়বান্দা। "বলুন না দাদা, নিশ্চয়ই কিছু একটা দেখেছেন"। অধ্যাপক বলেন কি, "না, না, থাক; অসভ্য কথা"। "অসভ্য কথা!" এটা শুনে তো স্যারের হয়ে গেছে!  কোনোরকম স্যার তাঁর বাটারফ্লাই গোঁফের তলায় হাঁসিটাকে লুকিয়ে, এবার একেবারে ঝুঁকিয়ে শুরু করেছেন "একবার বলুন না দাদা, একবার বলুন," বলে। শেষমেশ অধ্যাপক মশাই ভাঙলেন, আর মুখ ঘুরিয়ে স্যারকেই জিজ্ঞাসা করলেন, "আচ্ছা অমলেশ, গরু গুলো পাঁচিলের উপরে উঠে হাগু মানে পটি করল কি করে বল তো?" স্যার  তো হতবাক,  ঘোর কাটিয়ে যে টুকু বুঝলেন তা হল, দর্শনের পোকা একবার নড়ে গেলে, পথে এরকম ছোট খাটো দেরী হয়ে যায়। এটাকে ধর্তব্যের মধ্যে আনতে নেই।
যা কিছু আমরা দেখি, তার থেকে জন্ম হয় দর্শনের, দর্শনের অভিজ্ঞতার, এবং তার ঐতিহ্যের। তাই দর্শনের চমক, পথে প্রায়শই বিলম্ব ঘটায়। কিছুদিন আগে আমার সঙ্গে দেখা হয়ে গেছিল পাঁচিল টপকে একেবারে রাস্তার গায়ে ঢলে পড়া হলুদ হলুদ ফুলেল লতার দারুন দেখতে এক ঝোপের সাথে। একই জিনিস ঘটলো আমার সাথেও; দর্শন সঞ্জাত সে পুলক আমাকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও সব কিছু ভুলিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল তার সৌন্দর্যের কাছে নতজানু করে। পথে দেরী তো হবেই।







 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

'জল পড়ে, পাতা নড়ে' ঃ রবীন্দ্রনাথ না বিদ্যাসাগরের লেখা?

জল পড়ে, পাতা নড়ে - সহজ অথচ অমোঘ এমন দুটি লাইন মনে হয় কোনো উপনিষদীয় ঋষির স্বর্গীয় কাব্য সিদ্ধির অনুপম ফসল ছাড়া কিছু হতে পারে না।  বৃষ্টিপাতের সঙ্গে অনিবার্য ভাবে উচ্চারিত হওয়া এই শ্লোক কেবল সৃষ্টির আপন খেয়ালেই রচিত হতে পারে। সেই কবে থেকে এর অনন্য স্বাদ মস্তিস্কের কোষে কোষে এক অদ্ভুত ভালোলাগার মোহ তৈরি করা শুরু করেছিল তা আজও অটুট এবং সমানভাবে সক্রিয় , মোহ ভঙ্গের নামই নেই। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত এর জাদুময় মোহপাশ থেকে মুক্ত হতে পারেন নি। যদিও রবীন্দ্রনাথই প্রথম এই দুটি লাইন লেখেন ‘জীবন স্মৃতি’ র পাতায়। মনে হয় স্রষ্টা যেন নিজেই তাঁর সৃষ্টির মহিমায় হতবাক হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এখানে একটা টুইস্ট আছে। কারণ রবীন্দ্রনাথ এই দুটি লাইন লিখলেও লেখার শ্রেয় কিন্তু তিনি দিয়েছেন বিদ্যাসাগরকে। এখন প্রশ্ন, কেন! উত্তর - ভ্রান্তি সুখে। কিন্তু সে প্রসঙ্গে পরে আসছি। ‘জীবন স্মৃতি’ তে তাই দেখা গেল যতবার তিনি ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ লিখেছেন ততবারই তাকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রেখেছেন। অন্য কারোর লেখা লিখলে তাকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রাখাই দস্তুর। কিন্তু তাতে কি! শিশুবেলার মুগ্ধতা যেন কিছুতেই প্রশমিত হতে পারে...

১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্ট, কোথায় ছিলেন গান্ধীজী?

১৫০/বি বেলেঘাটা মেন রোড। শিয়ালদহ স্টেশন ও ই-এম বাইপাস এর মধ্যে সংযোগ স্থাপন কারী মূল রাস্তা - বেলেঘাটা মেন রোড তথা সুরেশ চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রোডের ওপর পড়া এই বিশেষ ঠিকানা টি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে এক গৌরবময় স্মৃতির সাক্ষ্য বহন করছে । বিশেষ করে, প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় আসন্ন হলে, এই ঠিকানার কথা স্মরণ না করে থাকা যা য় না। কারণ ১৯৪৭ এ গোটা দেশ যখন স্বাধীনতার আনন্দ উদযাপনে ব্যস্ত, বিশেষ করে রাজধানী দিল্লিতে স্বাধীনতা লাভের (১৫ ই আগস্ট) দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখতে আয়োজিত হয়েছে অভূতপূর্ব রাজকীয় সমারোহের - যার শুভ সূচনা হয়েছে, ১৪ ই আগস্টের মধ্যরাতে; ১৫ তারিখ পদার্পণ করতেই দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর ঐতিহাসিক বক্তৃতা দিয়ে শুভারম্ভ হয়েছে স্বাধীনতা দিবস পালনের মহা নির্ঘণ্ট। এই উচ্ছ্বাস যদিও কাঙ্ক্ষিতই ছিল। কারণ দীর্ঘ ২০০ বছরের পরাধীনতার কৃষ্ণ কাল অতিক্রম করার পরেই দেশবাসীর কাছে এসে পৌঁছেছিল সে বিরল মাহেন্দ্রক্ষণ। সমাগত হয়েছিল সেই মহা মুহূর্ত যখন প্রায় শত বর্ষ ধরে চলা স্বাধীনতাকামী মহাযজ্ঞে মুক্তিলাভের সিদ্ধি স্পর্শ করছিল তার চূড়ান্ত শিখর দেশ। কিন্তু এই যজ...

রবীন্দ্রনাথের চোখে বিদ্যাসাগর এবং দুজনের প্রথম সাক্ষাৎ!

রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং যাকে আদিকবির আখ্যায় ভূষিত করেছেন, যার লেখা বইয়ের (বর্ণ পরিচয়) হাত ধরে তাঁর প্রথম পরিচয় বাংলা বর্ণ যোজনার সঙ্গে, মাত্র চার বছর বয়সে পড়া যার লেখার প্রভাব থেকে কোনোদিন পারেননি মুক্ত হতে, ৫১ বছর (১৯১২) বয়সে লেখা 'জীবন স্মৃতি' তে তাই যার লেখার কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন ‘জল পড়ে, পাতা নড়ে’ র মত বাংলা কাব্যের ইতিহাসে চির কালজয়ী দুটি লাইন সেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল মেট্রোপলিটন স্কুলে।   ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিদ্যাসাগর তখন মেট্রোপলিটন স্কুলের সভাপতি আর সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রামসর্বস্ব ভট্টাচার্য ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সংস্কৃত ভাষার গৃহ শিক্ষক। রামসর্বস্ব পণ্ডিত ছোট্ট রবীন্দ্রনাথ কে ‘ম্যাকবেথে’র বাংলা অনুবাদ  করে শোনাতেন, আর তা শুনে বাংলায় লিখিত তর্জমা করতে হত রবীন্দ্রনাথকে। তর্জমা সম্পূর্ণ হলে তার গুনমান বিচার করতে রামসর্বস্ব ছাত্র রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে শরণাপন্ন হলেন বিদ্যাসাগরের কাছে। কেমন ছিল সেই প্রথম সাক্ষাৎ পর্ব! রবীন্দ্রনাথ তার আত্মজীবনী ‘জীবনস্মৃতি’ তে সে কথা লিখেছেন বিস্তারিত। ‘জীবন স্মৃতি’র ‘ঘরের পড়া’ অধ্যায়ে লেখা সে কাহ...