সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভ্যালেন্টাইন ভ্রান্তি।

ভ্যালেন্টাইন আর প্রেম ব্যাপারটা প্রায় সমার্থক হয়ে উঠেছে। ক্যালেন্ডারের পাতায় ১৪ই ফেব্রুয়ারী তারিখটি - নামে ভ্যালেন্টাইন ডে হিসেবে পালিত হলেও, আম জনতার চোখে তা প্রেমের দিন হিসেবেই পরিগণিত হয়। বিশেষ করে প্রেমিক প্রেমিকাদের কাছে ভ্যালেন্টাইন নামটি শুধু মাত্র প্রেমের দ্যোতনা নিয়েই হাজির হয়। তাদের কাছে ভ্যালেন্টাইন ডে মানে নিখাদ প্রেম উদযাপনের দিন বৈ কিছু নয়। যদিও ৭ই ফেব্রুয়ারী থেকে ধাপে ধাপে প্রথমে রোজ ডে, তারপরে প্রপোজ ডে, পরের দিন চকোলেট ডে, এই ভাবে ক্রমান্বয়ে টেডি ডে, প্রমিস ডে, হাগ ডে এবং কিস ডে' হয়ে শেষে ভ্যালেন্টাইন ডে এসে হাজির হয়। সারা সপ্তাহ ধরে চলে ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের প্রাক প্রস্তুতি। 
কিন্তু কে ছিলেন এই ভ্যালেন্টাইন, জানতে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে ২০০০ বছর আগের রোম শহরে। 
যত কাণ্ড রোমেঃ তখন ২৬৯ সাল। কিন্তু দুঃখের বিষয় খ্রিষ্ট জন্মের এত বছর পরেও ইতালির রোমে তখনো খ্রিষ্ট ধর্মের প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। তাই পাদ্রী ভ্যালেন্টাইনকে, তখনকার রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস, আইন ভেঙে ধর্ম প্রচার করার অপরাধে কারারুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ধর্ম  যাজনার পাশাপাশি ভ্যালেন্টাইনের আর একটা পরিচয় ছিল, পেশায় তিনি ছিলেন একজন ডাক্তার। কথায় আছে ঢেঁকি বেহেস্তে গেলেও ধান ভাঙ্গতে ছাড়ে না। তাই জেলখানার মধ্যেও ভ্যালেন্টাইন তাঁর চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করতে ভোলেননি। সারিয়ে তুলেছিলেন কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন  মেয়েকে। এমনকি সেই মেয়েটির সঙ্গে, তিনি প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছিলেন বলেও শোনা যায়। যদিও এই সম্পর্ক নিয়ে অনেক রকম কেচ্ছা কাহিনীও প্রচলিত রয়েছে। কেউ কেউ একে আবার অবৈধ সম্পর্ক বলে অভিহিত করেন। কিন্তু ভ্যালেন্টাইন কে রাজা ক্লডিয়াস মৃত্যু দণ্ড দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ অন্য কারনে। রাজার নির্দেশে সৈনিকদের তখন বিবাহ করা নিষিদ্ধ ছিল। আইন ভেঙে অনেককেই তাই জেলবন্দী হতে হয়েছিল সেসময়। ভ্যালেন্টাইন সেই সৈনিকদের সাহায্য করতেন তাদের প্রেমের সম্পর্কে ফিরে যেতে। এইভাবে যত সময় গেছে, ভ্যালেন্টাইন যেন দিনে দিনে প্রেমের অবতার হয়ে উঠছিলেন সবার কাছে, যেটা রাজা ক্লডিয়াসের যথেষ্ট গাত্রদাহের কারণ হয়ে গিয়েছিল এবং বলাই বাহুল্য ভ্যালেন্টাইন কে এই কারনে বেশীদিন জীবিত রাখতে চাননি তিনি। তাই যথারীতি প্রাণদণ্ডই বরাদ্দ হয় ভ্যালেন্টাইনের জন্যে। এবং শেষ পর্যন্ত ১৪ ই ফেব্রুয়ারীর দিন, ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যু দণ্ড কার্যকরী হয়। প্রেমের জন্য এই আত্মত্যাগের কথা স্মরণে রাখতেই, ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিও ১৪ ই ফেব্রুয়রীর দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবে পালন করার কথা ঘোষণা করেন।  এই হোল ভ্যালেন্টাইন দিবসের হিস্ট্রি। আজকের দিনে যা প্রেমিক প্রেমিকাদের কাছে প্রেম নিবেদনের দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে। কিন্তু প্রেম দিবসে যেমন প্রেম আছে তেমনি আছে বিভ্রাট ও। তাই নিয়েই আজকের লেখা, গল্পের ফরম্যাটে ঃ হ্যাপি ভেলেনটাই দায়ী! ভ্যালেন্টাইন ভ্রান্তি।

হ্যাপি ভেলেনটাই দায়ী!

"আরে, রামু তুই!" "কোথায় যাচ্ছিস, বাড়ি"? ধর্মতলায়, দীঘা যাওয়ার সরকারি বাসের টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন।

রামু, কাঁধে আর বাঁ হাতে দুটো ভারী ব্যাগ নিয়ে অনেকক্ষণ হলো লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। বাস আসেনি তাই টিকিট দেওয়া শুরু হয়নি।

এদিকে বীথির বেরোতে দেরী। যোধপুর পার্কের এক মেস বাড়িতে পিজি হিসেবে থাকে সে। যাদবপুর ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষ, ইংরেজি অনার্সের ছাত্রী। মোবাইলে অ্যালার্ম দেওয়া ছিল, তাও আলস্য করে শুয়েছিল বিছানা আঁকড়ে। উঠেই যত তাড়াহুড়ো। ছুটতে ছুটতে এসেছে; কপাল ভালো, বাসটা সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে গেছিল।

এখানে এসে রামুকে দেখতে পেয়ে যেন হাতে চাঁদ পেয়ে যায় সে। "নে নে এটা ধর; তোর আর আমার দুটো টিকিট কেটে নিবি"! বরাবরই ভীষণ বাধ্য গোছের ছেলে, রামু। বীথি, ৫০০ টাকার একটা নোটকে আলতো করে রামুর হাতের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়।

পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা আধবুড়ো লোকটা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে ওদের দিকে।

বাস ধর্মতলা থেকে বেরিয়ে, ফোর্ট উইলিয়াম হয়ে সেকেন্ড হুগলি ব্রিজের ওপর উঠতেই, বীথি রামুকে দুটো চিকলেট দেয় খেতে। ক্লাস এইট অব্দি একই সাথে পড়েছে তারা। তারপরে রামু আর পড়েনি। এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রীর দোকানে ঢোকে কাজ শিখবে বলে। পাশাপাশি পাড়ায় বাড়ি দুজনের।

বীথির ফোনে টুংটাং করে মেসেজ আসার শব্দ হয়। সে ফোন বার করে হোয়াটসঅ্যাপ চেক করতে থাকে। মনোজ একটা ভিডিও পাঠিয়েছে। ফানি ইমোজি দেওয়া। ক্লিক করতেই শুরু হয়ে যায় ভিডিওটি; প্রথমেই দুটো ছেলে আর মেয়ে বেরিয়ে পড়ে, স্ক্রীন জুড়ে।

বীথি ইয়ার ফোনের একদিকটাকে - রামুর কানে গুঁজে দেয়। আর একটা নিজের কানে ঢুকিয়ে রাখে। দুজনেই দেখতে থাকে ভিডিওটি।

বাহ্, ছেলেটি বেশ কায়দা করেই মেয়েটির হাতে একটা টকটকে লাল গোলাপ তুলে দিতে যাচ্ছিল। "হ্যাপি....!" ব্যাস! কথা আটকে গেল। মুখ দিয়ে আর কথা বেরোয় না; বেরোবে কি, দ্যাখে একজন ষণ্ডা মার্কা লোক, তিড়িং তিড়িং করে তার বিশাল ঝাঁটার মতো ভ্রু কে ক্রমাগত নাচিয়ে যাচ্ছে সামনে দাঁড়িয়ে। "কে হ্যাপি, এখানে আমিই একা হ্যাপি। আমার এরিয়ায় আর কোনো হ্যাপি থাকবে না"!

"এই রে কেলো হয়ে গেলো তো," মুচকি হেঁসে বীথি চোখ তুলতেই রামু অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে।

পরের সিনে ওই ছেলেটিই আবার মেয়েটাকে একটা বড় রেস্তোরাঁতে নিয়ে গেছে। খুব খুশি দুজনে। শেষে ...মেয়েটির হাতটা, নিজের হাতের ওপর টেনে জাস্ট বলা শুরু করেছে, "হ্যাপি..."! অমনি সেই লোকটি এসে হাজির। বিশাল বপু, হাতে এবার ইয়া লম্বা একটা হকি স্টিক , দাঁড়িয়ে আছে যেন মূর্তিমান বিভীষিকা। "কে হ্যাপি? এখানে আমিই একমাত্র হ্যাপি। এক রেস্তোরাঁয় দুজন হ্যাপি থাকতে পারে না!" ব্যাস। চটকে ঘন্ট।

পরের দিন খুব সন্তর্পণে, ছেলেটি এবার তার বান্ধবীটিকে নিয়ে গেছে প্রায় একটা নির্জন গলির মধ্যে। একটাই দোকান সেখানে। কিছু চকলেট কিনে মেয়েটির হাতে দিয়ে যেই না বলা শুরু করেছে, "হ্যাপি...!" ব্যাস, , আবার সেই দস্যুর মতো মানুষটা, কোন ভাগাড় থেকে যে এসে হাজির হলো। কেচিয়ে, আবারো পুরো মামলা ভন্ডুল। রামুর বেশ রাগ হচ্ছিল লোকটার ওপর।

জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখে হুহু করে ঘর বাড়ি গাছ পালা সব দৌড়ে যাচ্ছে উল্টো মুখে। বীথি ঈশারা করে ভিডিওটি দেখতে বলে রামুকে। ও বাবা, ছেলেটি এবার মেয়েটিকে নিয়ে সোজা সুন্দরবনের অরণ্যে চলে গেছে। নিরিবিলি, শুধু পাতার শব্দই মাঝে মাঝে নীরবতা ভেঙে দিয়ে যাচ্ছে। দুজনে খুব কাছাকাছি। পরস্পর পরস্পরকে জড়িয়ে, চুমু খেতে যাচ্ছে আর কি। "হ্যাপি...!" আরে! এখানেও সেই হ্যাপি গুন্ডা? "এক জঙ্গলে দুই হ্যাপি থাকতে পারে না।" মহা মুশকিল!

বীথি এবার ভিডিও বন্ধ করে দেয়। মুচকি হেঁসে রামুর দিকে তাকিয়ে থাকে। "কি রে কেমন লাগলো বল তো দেখি"?

"কি আর বলবো, সব কিছুর মূলে ওই ভেলেনটাই দায়ী"! "অ্যাঁ কি বললি."?

"ওই তো ......."

"হ্যাপি ভেলেনটাই দায়ী !"

ইতিমধ্যে বীথির ফোনটাও বেজে উঠেছে, রিং টোনের শব্দে গমগম করছে কান। স্ক্রীনে ভেসে উঠছে মনোজের নাম।

বীথি দেখেও তুলছে না ফোন। তার কানে তখন শুধুই বেজে যাচ্ছে,

হ্যাপি ভেলেনটাই দায়ী!

--------------------------------------

পাদটীকা: শিরোনামে হ্যাপি - একজন দুষ্টু লোকের নাম।

ভেলেনটাই অর্থাৎ ভিলেনটাই।

নাটকে সিনেমায়, সাধারণত বাজে বদমাশ লোককে ভিলেন বলা হয়।

রামুর দেহাতি উচ্চারণে ভিলেন, ভেলেন হয়ে যায় সহজেই। তাই ভিলেনটাই বলতে গিয়ে, ভেলেনটাই বলে সে।

সবশেষে দায়ী কথাটা শুনতে অনেকটা দ্যেয় বা ডে'র মতোই লাগে।

তাই কি শুনতে কি শুনলাম গোছের এক বিভ্রাট তৈরি হয় শিরোনামের মধ্যে।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

'জল পড়ে, পাতা নড়ে' ঃ রবীন্দ্রনাথ না বিদ্যাসাগরের লেখা?

জল পড়ে, পাতা নড়ে - সহজ অথচ অমোঘ এমন দুটি লাইন মনে হয় কোনো উপনিষদীয় ঋষির স্বর্গীয় কাব্য সিদ্ধির অনুপম ফসল ছাড়া কিছু হতে পারে না।  বৃষ্টিপাতের সঙ্গে অনিবার্য ভাবে উচ্চারিত হওয়া এই শ্লোক কেবল সৃষ্টির আপন খেয়ালেই রচিত হতে পারে। সেই কবে থেকে এর অনন্য স্বাদ মস্তিস্কের কোষে কোষে এক অদ্ভুত ভালোলাগার মোহ তৈরি করা শুরু করেছিল তা আজও অটুট এবং সমানভাবে সক্রিয় , মোহ ভঙ্গের নামই নেই। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত এর জাদুময় মোহপাশ থেকে মুক্ত হতে পারেন নি। যদিও রবীন্দ্রনাথই প্রথম এই দুটি লাইন লেখেন ‘জীবন স্মৃতি’ র পাতায়। মনে হয় স্রষ্টা যেন নিজেই তাঁর সৃষ্টির মহিমায় হতবাক হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এখানে একটা টুইস্ট আছে। কারণ রবীন্দ্রনাথ এই দুটি লাইন লিখলেও লেখার শ্রেয় কিন্তু তিনি দিয়েছেন বিদ্যাসাগরকে। এখন প্রশ্ন, কেন! উত্তর - ভ্রান্তি সুখে। কিন্তু সে প্রসঙ্গে পরে আসছি। ‘জীবন স্মৃতি’ তে তাই দেখা গেল যতবার তিনি ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ লিখেছেন ততবারই তাকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রেখেছেন। অন্য কারোর লেখা লিখলে তাকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রাখাই দস্তুর। কিন্তু তাতে কি! শিশুবেলার মুগ্ধতা যেন কিছুতেই প্রশমিত হতে পারে...

১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্ট, কোথায় ছিলেন গান্ধীজী?

১৫০/বি বেলেঘাটা মেন রোড। শিয়ালদহ স্টেশন ও ই-এম বাইপাস এর মধ্যে সংযোগ স্থাপন কারী মূল রাস্তা - বেলেঘাটা মেন রোড তথা সুরেশ চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রোডের ওপর পড়া এই বিশেষ ঠিকানা টি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে এক গৌরবময় স্মৃতির সাক্ষ্য বহন করছে । বিশেষ করে, প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় আসন্ন হলে, এই ঠিকানার কথা স্মরণ না করে থাকা যা য় না। কারণ ১৯৪৭ এ গোটা দেশ যখন স্বাধীনতার আনন্দ উদযাপনে ব্যস্ত, বিশেষ করে রাজধানী দিল্লিতে স্বাধীনতা লাভের (১৫ ই আগস্ট) দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখতে আয়োজিত হয়েছে অভূতপূর্ব রাজকীয় সমারোহের - যার শুভ সূচনা হয়েছে, ১৪ ই আগস্টের মধ্যরাতে; ১৫ তারিখ পদার্পণ করতেই দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর ঐতিহাসিক বক্তৃতা দিয়ে শুভারম্ভ হয়েছে স্বাধীনতা দিবস পালনের মহা নির্ঘণ্ট। এই উচ্ছ্বাস যদিও কাঙ্ক্ষিতই ছিল। কারণ দীর্ঘ ২০০ বছরের পরাধীনতার কৃষ্ণ কাল অতিক্রম করার পরেই দেশবাসীর কাছে এসে পৌঁছেছিল সে বিরল মাহেন্দ্রক্ষণ। সমাগত হয়েছিল সেই মহা মুহূর্ত যখন প্রায় শত বর্ষ ধরে চলা স্বাধীনতাকামী মহাযজ্ঞে মুক্তিলাভের সিদ্ধি স্পর্শ করছিল তার চূড়ান্ত শিখর দেশ। কিন্তু এই যজ...

রবীন্দ্রনাথের চোখে বিদ্যাসাগর এবং দুজনের প্রথম সাক্ষাৎ!

রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং যাকে আদিকবির আখ্যায় ভূষিত করেছেন, যার লেখা বইয়ের (বর্ণ পরিচয়) হাত ধরে তাঁর প্রথম পরিচয় বাংলা বর্ণ যোজনার সঙ্গে, মাত্র চার বছর বয়সে পড়া যার লেখার প্রভাব থেকে কোনোদিন পারেননি মুক্ত হতে, ৫১ বছর (১৯১২) বয়সে লেখা 'জীবন স্মৃতি' তে তাই যার লেখার কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন ‘জল পড়ে, পাতা নড়ে’ র মত বাংলা কাব্যের ইতিহাসে চির কালজয়ী দুটি লাইন সেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল মেট্রোপলিটন স্কুলে।   ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিদ্যাসাগর তখন মেট্রোপলিটন স্কুলের সভাপতি আর সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রামসর্বস্ব ভট্টাচার্য ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সংস্কৃত ভাষার গৃহ শিক্ষক। রামসর্বস্ব পণ্ডিত ছোট্ট রবীন্দ্রনাথ কে ‘ম্যাকবেথে’র বাংলা অনুবাদ  করে শোনাতেন, আর তা শুনে বাংলায় লিখিত তর্জমা করতে হত রবীন্দ্রনাথকে। তর্জমা সম্পূর্ণ হলে তার গুনমান বিচার করতে রামসর্বস্ব ছাত্র রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে শরণাপন্ন হলেন বিদ্যাসাগরের কাছে। কেমন ছিল সেই প্রথম সাক্ষাৎ পর্ব! রবীন্দ্রনাথ তার আত্মজীবনী ‘জীবনস্মৃতি’ তে সে কথা লিখেছেন বিস্তারিত। ‘জীবন স্মৃতি’র ‘ঘরের পড়া’ অধ্যায়ে লেখা সে কাহ...