আমার বাড়ি যেখানে সেই কাঁথিতে, স্থানীয় ভাবে অনেকগুলি দৈনিক সংবাদ পত্রিকা
প্রকাশিত হতো। এখনোও হয়, দীর্ঘদিন ধরেই তা হয়ে আসছে।
কিন্তু সব টুথপেস্ট যেমন কোলগেট নয় তেমনি কাঁথি থেকে প্রকাশিত সমস্ত দৈনিক
পত্রিকার নাম 'দৈনিক
চেতনা'
না হলেও
আমরা ছোটবেলায় খবরকাগজ বলতে 'চেতনা'কেই
বুঝতাম।
বলাই বাহুল্য এই কার্টুনটি ছিল একটি মিষ্টি মিষ্টি দেখতে আমেরিকান কালো ভালুকের। এটি এঁকেছিলেন বিখ্যাত কার্টুনিস্ট ক্লিফোর্ড বেরিম্যান। বেরিম্যানের আঁকা এই কার্টুনটির নাম ছিল টেডি'স বিয়ার। অর্থাৎ টেডির বিয়ার। কিন্তু কে এই টেডি?
শুনলে অবাক হবেন ইনি ছিলেন তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট, যার ডাক নাম ছিল টেডি। কিন্তু হঠাৎ রুজভেল্টের ডাকনাম কেন? এর পেছনে অবশ্য একটা মজার গল্প আছে। ১৯০২ এরই নভেম্বর মাসের গোড়ার দিকের কথা। রুজভেল্ট সেবার মিসিসিপির গভর্ণর অ্যান্ড্রু এইচ লঙ্গিনোর আমন্ত্রণে ভালুক মৃগয়ায় গিয়েছিলেন সেখানকার এক পাহাড়ি উপত্যকায়। উল্লেখ্য, সেখানে সকলেই কমবেশি ভালুক শিকার করতে সমর্থ হলেও রুজভেল্ট কিন্তু কোনোভাবে সফল হননি। তা ব্যর্থ রুজভেল্টকে খুশী করার জন্য ওঁর কিছু সহচর একটা ভালুককে আগে থেকে ধরে একটা উইলো গাছের গুঁড়ির সঙ্গে বেঁধে রেখেছিলেন, যাতে রুজভেল্ট সহজেই তা শিকার করে নিজের দূর্নাম ঘোচাতে পারেন। যদিও রুজভেল্ট এইভাবে মিথ্যে গৌরবের অধিকারী হতে সম্মত হননি। তবে নিজে না মারলেও তাঁর সহচরদের নির্দেশ দেন আধমরা এই ভালুকটিকে মেরে ফেলার জন্য। যে ঘটনাটি জানাজানির পর ক্লিফোর্ড কার্টুনটি এঁকেছিলেন, যে ঘটনার কথা আগেই বললাম। বাস্তবে খেলনা কারিগর মিসকমকে কিন্তু অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল তাঁর তৈরি ভালুকছানার পুতুলটিকে - টেডি বিয়ার নামে অভিষিক্ত করতে। কারণ, টেডি নামটি কোনো সাধারণ মানুষের নাম ছিল না, স্বয়ং আমেরিকান প্রেসিডেন্টের ডাকনাম এটি; শোনা যায় রুজভেল্ট নাকি তাঁর এই ডাকনামটিকে তেমন পছন্দ ও করতেন না। সর্বোপরি, কোনো প্রেসিডেন্টের ডাক নামে কোনো ভালুকছানার মতো দেখতে পুতুলের নাম রাখা একেবারেই সহজ কাজ ছিল না। তাই সব দিক বুঝে, মিসকম প্রথমে একটি সুন্দর দেখে নরম, তুলতুলে ভালুকের পুতুল পাঠিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের কাছে এবং পরবর্তী ধাপে তাঁর ডাক নাম ব্যবহার করে ভালুক পুতুলের নাম রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন। বলাই বাহুল্য, রুজভেল্ট তাতে নিমরাজি হননি। একই সময়ে জার্মানিতেও টেডি বিয়ার তৈরি করেছিলেন আর এক খেলনা কারিগর - রিচার্ড স্টিফ। ক্রমে ক্রমে টেডি বিয়ার, আমেরিকা ইউরোপেরও সীমানা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল বাকি গোটা বিশ্বে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, গোটা বিশ্বের সমস্ত শিশুদের কাছেই টেডি বিয়ার একটি অতি প্রিয় খেলার সাথী হিসেবে তার স্থান পাকা করে নিয়েছে।
তাই তো কোলকাতার এক টেডি বিক্রেতা একসাথে বিড়াল, ইঁদুর, খরগোশ মুখো পুতুল গুলোকে এক সুতোয় বেঁধে এমনভাবে ঝুলিয়ে রেখেছেন যে আসল ভালুক-মুখো টেডি খুঁজে বার করা খুব দুষ্কর। এর মধ্যে কিন্তু অন্য মানে খুঁজবেন না প্লিজ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন