সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সেগুন মঞ্জরী ও দেবীপক্ষের সূচনা!

মহালয়ার সন্ধ্যায়, মেঘ যেন ধরিত্রীর উদ্দেশ্যে তার বৃষ্টি তর্পণ শুরু করেছে। কথায় বলে, একা অমাবস্যায় হয় না, কৃষ্ণ মেঘ দোসর। একে তো আকাশ আজ চন্দ্রহীন, তারপরেও ওইরকম টিমটিম করে জ্বলা, কয়েক পুঞ্জ নক্ষত্রকেও যদি, মেঘ তার কালো কম্বলের তলায় ঘুম পাড়িয়ে রাখে তো আর রইলোটা কি, হাতে হ্যারিকেন ছাড়া! মা আসছেন, বেতার ভবন থেকে, দেবীপক্ষের সূচনা ঘন্টা বাজিয়ে দিয়েছেন, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র। কিন্তু কিছু মজা আসছে না। বৃষ্টির ছাঁট, ট্রেনের জানালা দিয়ে, পুজোর চাঁদা তুলতে আসা পাড়ার মাতব্বরদের মতো ছিটপিট করে ঢুকে পড়ছে , আর চোখ মুখ ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। দিনের আলো থাকতে, রূপনারায়ণের দুই পাড়ে - খানিক কাশের দোল খাওয়া দেখা যেত। বর্ষা উত্তর, রূপনারায়ণের ভরা যৌবন; আর তাতে জোয়ারের সময় কেমন কাশ ফুল গুলো ডুবে ডুবে জল খায়, তাও দেখা যেত মন্দ নয়। কিন্তু এখন জানালার বাইরে শুধুই অন্ধকার। নিকষ কালো। সমুদ্রের মতন। দূরে মাছের ভেড়িতে জ্বলে থাকা আলো গুলো যেন ছোট ছোট খেয়া নৌকার মতো টলমল করছে। মাঝে মাঝে বিদ্যুতের চকমকি, আঁধারের কেশগুচ্ছ কে যেন ছিঁড়ে, ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলছে। সাথে গুরু গুরু কন্ঠে, মেঘের উচ্চা...

ইচ্ছে মৃত্যু হয়, ইচ্ছের নয়!

ইচ্ছে-মৃত্যু হয়; মহাভারতে যেমন, গঙ্গা পুত্র ভীষ্মের হয়েছিল! কিন্তু ইচ্ছের, কোনোদিন মৃত্যু হয় না! ইচ্ছের দম থাকলে, স্বয়ং ঈশ্বরও সেই ইচ্ছেপূরণের জন্য তাঁর সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। অপূর্ণ ইচ্ছের স্রোত, মৃত চেতনাতেও প্রবাহিত হয়ে চলে নিরন্তর। পার্থিব শরীরের বিনাশ, ইচ্ছেকে মূল্যহীন করতে পারে না। আসলে, আন্তরিক ইচ্ছে - অবিনশ্বর ও চির অমর। মৃত্যুর পরেও সক্রিয় থাকে তার পূর্ণ হওয়ার দাবী। যেমনটি হলো ৭৬ বছর বয়সে প্রয়াত হওয়া, রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তা সঞ্চিতা বক্সীর জীবনে; বেঁচে থাকতে, একান্তে জানিয়েছিলেন তাঁর ইচ্ছের কথা। কিন্তু সেটা পূরণ হোল, তাঁর জীবনাবসানের পরে। না, আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ব্যাপারে, কোনো ইচ্ছে পত্র করে যাননি তিনি। মায়ের অন্তরঙ্গ ইচ্ছের কথা শুধু জানতেন তাঁর চক্ষুবিদ মেয়ে ও জামাই। পাশাপাশি, তাঁর সুদীর্ঘ কর্মজীবনে, তাঁর মনের গোপন ইচ্ছের কথা বারবার প্রত্যয়িত হতে দেখা গেছে, মৃত্যু-পরবর্তী অঙ্গদান সংক্রান্ত নানা অনুষ্ঠানে তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি ও তাঁর দেওয়া সেইসময়কার বিভিন্ন বক্তৃতায়। এই বিষয়ে তাঁর সপ্রশ্রয় দৃষ্টিভঙ্গি সেই কথারই প্রমান দিয়ে এসেছে বারবার। পেশায় ডাক্তা...

পুরুলিয়া থেকে প্যালেস্টাইন!

হ্যাঁ তিনিই পারলেন। আবেগ কম্পিত উচ্চারণে , ভারত আত্মার -  গোপন মনের কথা তিনি  শুনিয়েই দিলেন।    বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিলেন সেই বার্তা , যা প্রতিটি ভারতীয়ের হৃদয়ে এক অপ্রকাশিত করুন সুরের মতো প্রতিনিয়ত বেজে চলে , তাকে বিব্রত করে ; তবু সে আওয়াজ অস্ফুট থেকে যায়। ৬ই সেপ্টেম্বরের সন্ধ্যায় , ভারত থেকে ৭০০০ কিলোমিটার দূরে , ইতালির জল নগরী ভেনিসের মাটিতে আয়োজিত ৮২ তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, ২০২৫ এর মঞ্চে তখন তিনি পাদপ্রদীপের আলোয়। লাল পাড় সাদা শাড়িতে , তিনি পুরুলিয়ার নারায়নপুর গ্রামের মেয়ে। একান্তই এক স্বপ্নের পেছনে ধাওয়া করা , অদম্য উচ্ছলতায় বয়ে যাওয়া পাহাড়ী ঝর্নার মতো তাঁর ব্যক্তিত্বের ঝলক , উপস্থিত সকলকে তখন বাকরুদ্ধ করে ফেলেছে। ৮২ তম ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে  অনুপর্ণা   রায়! নামটা বলে না দিলেও , হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন এই মেয়েটি সত্যিই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তাঁর সাফল্যের ব্যাপ্তি দিয়ে। জীবনের প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র , আর তাতেই একে...

'সখী, ভাবনা কাহারে বলে!'

ভাবনার বুকে আগুন জ্বলে সারাদিন । রাবণের চিতার মতো ! ভাবনার মুখে লেগে থাকে , বোকা বানানোর অমোঘ হাঁসি । চোখের ইশারায় - ডুব দিয়ে মরার হাতছানি । ভ্রু পল্লবে বিনিদ্র রজনী যাপনের রোমান্টিকতা । ভাবনার কবলে পড়ার একটা আলাদা রোমাঞ্চ রয়েছে , যার মুখবন্ধে থাকে অপাপবিদ্ধ কৌমার্য হারানোর অ্যাডভেঞ্চারাস ঝুঁকি , আর উপসংহারে থাকে যাবজ্জীবন বন্দী থাকার কঠিন , নিষ্ঠুর নিয়তি । যাকে এড়িয়ে যাওয়ার সাধ্য কারুর নেই । রবীন্দ্রনাথ যত সহজে , ' সখী, ভাবনা কাহারে বলে " ব ' লে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতে পারেন , তত সহজে আম আদমি পারে না। ভাবনা অনেকটা , প্রথম পাতে পড়া স্যালাডের শসার মতো। সকলকে ভাবায় , কিন্তু নিজে ভাবার বেলায় একদম ভ্যাবাচ্যাকা , লবডঙ্কা। ভাবনা যদি বিষয় ভিত্তিক হয় তবে তার তল খুঁজে পাওয়া কঠিন নয়। কিন্তু ভাবনা যদি এলোমেলো হয় , হাইওয়ে দিয়ে , হুহু করে ছুটে যাওয়া বাসের জানালায় ভিড় করে আসা বাতাসের মতো - কখনো হালকা , কখনো রোদে পোড়া , কখনো বৃষ্টির ছাঁট বয়ে আনা , কখনো ...