একসময়ের জলা জঙ্গলে ভর্তি নীচু জমি,
শোনা
যেত
শেয়ালের
ডাক।
তাই নাম ছিল
শেয়াল-দিহি (জলে ঘেরা ভূ- খণ্ড)। ক্রমে
ক্রমে
তা
সবার
কাছে
পরিচিত
হয়ে
ওঠে
শিয়ালদহ
বা
শিয়ালদা
নামে।
তারপরে এক এক করে কেটে গেছে ১৬১ টি বছর, নানা ঘাত-প্রতিঘাত, ওঠা পড়া, বিবর্তনের
মধ্য
দিয়ে শিয়ালদহ
স্টেশন আজ তার বর্তমান রূপে এসে
দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে
উত্তর বা মেইন ও দক্ষিণ
এই দুটি টার্মিনাল
বিশিষ্ট
শিয়ালদহ
স্টেশনে
রয়েছে
২৮
টি
ট্র্যাক
ও
২১
টি
প্ল্যাটফর্ম।
সংলগ্ন
মেট্রো
স্টেশন
মিলিয়ে
প্রত্যহ
২
মিলিয়ন
অর্থাৎ
২০
লক্ষ
মানুষ
ব্যবহার
করেন
এই
স্টেশন।
শুধু
তাই
নয়,
প্রতিবেশী
রাষ্ট্র
বাংলাদেশের যাত্রীদেরও ভারতে
ঢোকার
প্রধান
গেটওয়ে
এই
স্টেশন।
তাই
এর
গুরুত্ব
অপরিসীম।
আর
সেই
গুরুত্বকে
যথাযথ
মর্যাদা
দিতে
ভারত
সরকার
শিয়ালদহ
স্টেশনকে
অমৃত
ভারত
স্টেশন
প্রকল্পের
আওতায়
নিয়ে
আসার
পরিকল্পনা নিয়েছে। স্বাধীনতার
৭৫
বছর
উদযাপনের
অন্যতম
উদ্যোগ
হিসেবে
এই
প্রকল্পের
অধীনে
প্রায়
২৭
কোটি
তাকা
খরচ
করে শিয়ালদহ স্টেশন
এবং
স্টেশন
চত্বরকে
ঢেলে
সাজানোর
পরিকল্পনা
নিয়েছে
ভারত
সরকারের
রেল
মন্ত্রক।
যার
শুভ
শিলান্যাস করেন মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী
শ্রী
নরেন্দ্র
মোদী
৬
ই
আগস্ট
সকাল
১১
টায়
ভিডিও
কনফারেন্স
এর
মাধ্যমে।
দেশ
জুড়ে
এই
প্রকল্পের
অধীনে মোট ১২৭৫
টি
রেল
স্টেশনের
পুনর্নবীকরনের
যে
কর্মসুচী
স্থির
করেছে
সরকার,
প্রথম
পর্যায়ে
আপাতত
৫০৮
টি
স্টেশনকে
এই
প্রকল্পের
আওতায়
আনা
হবে।
যার
জন্যে
প্রাথমিক
ভাবে
২৪,৪৭০
কোটি
টাকা
ব্যায়
বরাদ্দ
ধার্য
করেছে
রেল
কর্তৃপক্ষ।
বাংলার সামগ্রিক ভাবে
৯৪
টি
স্টেশনের
মধ্যে
প্রথম
পর্বে
৩৭
টি
স্টেশনে
প্রকল্প
রুপায়নের
কাজ
শুরু
হয়ে
যাবে
৬
ই
আগস্ট
থেকে,
প্রধানমন্ত্রীর
আনুষ্ঠানিক
উদ্বোধনের
পরেই।
এই
উপলক্ষে
৪
ঠা
আগস্ট, অর্থাৎ অমৃত
ভারত
স্টেশন
প্রকল্পের
শুভ উদ্বোধনের এক দিন আগে, শিয়ালদহ
স্টেশনে
এসেছিলেন
পূর্ব
রেলের
জেনারেল
ম্যানেজার
অলক
প্রসাদ
দ্বিবেদী।
খবরে
প্রকাশ
দ্বিবেদী
স্টেশন
আধুনিকীকরনের
প্রসঙ্গে
প্রধানমন্ত্রীর
আন্তরিক
ইচ্ছার
কথা
জানিয়ে
বলেন,
“পূর্ব
রেলের
২৮
টি
স্টেশনকে
নতুন
করে
সাজিয়ে
তোলা
হবে।
আধুনিক
ব্যবস্থাও
রাখা
হবে
স্টেশন
গুলিতে"। এক
প্রশ্নের
উত্তরে
দ্বিবেদী
আরো
জানান,
“শিয়ালদহ
স্টেশনের
ভিড়ের
কারণে
তৈরি
হওয়া
সমস্যার
পাকাপাকি
সমাধান
চায়
রেল"। সূত্রে
প্রকাশ,
যাত্রী
স্বাচ্ছ্যন্দ
বাড়াতে
বদ্ধপরিকর
রেল
কর্তৃপক্ষ
আশা
ব্যক্ত
করেছেন,
এই
প্রকল্প
কার্যকরী
হলে
শিয়ালদহ
স্টেশনের
প্রবেশ
পথ
থেকে
শুরু
করে
প্ল্যাটফর্ম,
শৌচাগার, বিশ্রামকক্ষ
সব
কিছুতেই
পরিবর্তনের
ছোঁয়া
লাগবে। সুত্রের খবর, রেল
অমৃত
ভারত
স্টেশনের
মর্যাদা
পাওয়া
স্টেশন
গুলিকে
সিটি
সেন্টারের
আদলে
গড়ে
তুলতে চায়।
তাহলে শিয়ালদহ স্টেশন ও কি ভবিষ্যতে কোনো সিটি সেন্টারের মত দেখতে লাগবে? সম্ভবত এই প্রশ্নের উত্তর দিতে রেল, আগামী দিনে শিয়ালদহ
স্টেশনকে
কেমন
দেখতে
লাগবে
তার
একটা
সম্ভাব্য
ছবি
প্রকাশ্যে
এনেছে
যা দেখে সকলেই
বেশ
উচ্ছ্বসিত। কারণ অনেকের চোখে প্রকল্প
রুপায়িত
হওয়ার
পর
শিয়ালদহ
স্টেশনকে
অনেকটা
বিমান
বন্দরের
মত
দেখতে
লাগবে বলে মনে হয়েছে। আগামী দিনে শিয়ালদহ স্টেশনের এই নব রুপান্তর নিশ্চিত ভাবে তার রত্নখচিত মুকুটে যোগ হওয়া নতুন রত্ন হিসেবেই পরিগণিত হবে।
দশকের পর দশক সময় পেরিয়ে গেছে, শিয়ালদহ স্টেশন সাক্ষী থেকেছে ইতিহাসে ঘটে যাওয়া বহু স্মরনীয় ঘটনার। শিকাগোতে
বিশ্ববিজয়
করে
ফেরা
স্বামীজীর
কোলকাতার মাটিতে শুভ পদার্পণের সঙ্গে যেমন তার নাম জড়িয়ে আছে ওতপ্রোত ভাবে,
তেমনি
১৯৪৭
এ
দেশভাগের
ফলে
উদ্বাস্তু
হয়ে
যাওয়া
কাতারে
কাতারে
উদভ্রান্ত
মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠার কথাও ইতিহাসে লেখা আছে বড় বড় করে।
আসলে সময়ের
সঙ্গে
সঙ্গে
শিয়ালদহ
স্টেশন
নিজেকে পাল্টে নিয়েছে বারবার; বিবর্তিত হয়েছে যাত্রীদের
নতুন নতুন চাহিদার
সঙ্গে
মানিয়ে
নিতে।
আগে
যেখানে
গুটি
কয়
বই
এর
স্টল
এবং
চা
–স্ন্যাক্সের
দোকান
ছাড়া
কিছুই
ছিল
না,
এখন
সেখানে
রীতিমত
শপিং
মল,
ঝাঁ
চকচকে
রেস্তোরাঁ,
সর্বোপরি
সারি
সারি
স্বর্ণ
বিপনী
স্টেশনের
অন্দরমহলকে যে অনেকটাই
বিপণনযোগ্য
করে
তুলেছে,
সে
ব্যাপারে
কোনো
সন্দেহ
নেই। আর এত সব
সামলে,
শিয়ালদহ
স্টেশন
আবার
এক
ঐতিহাসিক
বিবর্তনের
সামনে
এবং
যথারীতি সময়ের দাবী মেনে নতুন রূপান্তরের
পথে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন