সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শুরু হল G20 শীর্ষ সম্মেলন! প্রেসিডেন্ট মুর্মুর বিশেষ ডিনারে আমান্ত্রিত ১৭০!

রাজধানী দিল্লীতে শুরু হল ১৮তম G20 শীর্ষ সম্মেলন  আয়োজক দেশ ভারতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, ভারত মণ্ডপম কনভেনশন সেন্টারে পাতা রেড কার্পেটে দাঁড়িয়ে স্বাগত জানালেন আমেরিকা যুক্ত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন থেকে শুরু করে শীর্ষ সম্মেলনে আগত বিশ্বের তাবড় তাবড় রাষ্ট্র নেতাদের।  প্রধানমন্ত্রী মোদী যেখানে দাঁড়িয়ে স্বাগত করমর্দন করছিলেন G20 নেতাদের সঙ্গে, তার পশ্চাৎ পটে ছিল কোনার্কের সূর্য মন্দিরের আদলে তৈরি  পেল্লাই একটা রথ চক্রের রেপ্লিকা।  দিল্লীর প্রগতি ময়দানে আয়োজিত এই শীর্ষ সম্মেলনে আজ ৯ ই সেপ্টেম্বর বসছে প্রথম অধিবেশন। আগামীকাল  ১০ই সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সম্মেলনের দ্বিতীয় তথা অন্তিম অধিবেশন। । প্রথম অধিবেশনে দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনে রাখা দেশের নাম লেখা বোর্ডে ঊল্লেখযোগ্য ভাবে ইণ্ডিয়া নামের পরিবর্তে রোমান হরফে BHARAT লেখা থাকতে। অধিবেশনের শুরুতে, সম্মেলনের সভাপতি হিসেবে শ্রী নরেন্দ্র মোদী ডেকে নেন আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রধানকে, G20  র  নতুন স্থায়ী সদস্য হিসেবে। ২০২৩, G20  শীর্ষ সম্মেলন এই ভাবে ইতিহাসের পাতায় স্মরনীয় হয়ে থাকলো। কারন G20  এবার থেকে G21 হিসেবে পরিচিত হবে, যার সাক্ষী হয়ে থাকলো দিল্লীর এই ঐতিহাসিক    সভাস্থল।  সংবাদ সংস্থা ANI এর করা একটি টুইট সূত্রে জানা গেছে প্রধানমন্ত্রী তার উদ্বোধনী ভাষণ শুরু করার আগে এক শোক প্রস্তাব পেশ করেন।  সম্প্রতি মরক্কোয় ঘটে যাওয়া ভুমিকম্পের ফলে  মৃত্যুর ঘটনাতে তিনি গভীর মর্মবেদনা প্রকাশ করে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন এবং প্রতিশ্রুতি দেন ভারতের পক্ষ থেকে সবরকমের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার।  


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদী তাঁর  ভাষণে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলা যুদ্ধের ঘটনায় খেদ প্রকাশ করে বলেন এতে দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক আস্থা হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, “যদি আমরা কোভিডকে পরাস্ত করতে পারি, তাহলে হারিয়ে যাওয়া অনাস্থাকেও ফিরিয়ে আনতে পারবো সহজে।“  এই সূত্রে তিনি বলেন, “সবকা সাথ, সবকা  বিকাশ এবং সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস – ভারতের দেওয়া এই স্লোগান সারা বিশ্বকে পথ দেখাতে পারে।“
এছাড়াও, মোদীর এক টুইট বার্তায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের উপরে তাঁর রিমার্ক লিখতে গিয়ে অনুরণিত হতে শোনা গেল এবারের থিম ‘বসুধইব কুটুম্বকম’ এর প্রতিধ্বনি। তিনি লিখলেন, “My remarks at Session-1 on 'One Earth' during the G20 Summit.”  
এর মধ্যে ANI সূত্রে খবর, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দেওয়া আজকের অধিবেশন শেষে বিশেষ নৈশভোজে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধানকর ও তাঁর সহধর্মিণী সুদেশ ধানকর, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু সহ ১৭০ জন আমন্ত্রিত অতিথি। ভারত মণ্ডপম এর Multifunctional Hall এ অনুষ্ঠিত এই নৈশভোজে অন্যান্য দেশের রাষ্ট্র নেতাদের পাশাপাশি দেশের সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট ও প্রতিমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

'জল পড়ে, পাতা নড়ে' ঃ রবীন্দ্রনাথ না বিদ্যাসাগরের লেখা?

জল পড়ে, পাতা নড়ে - সহজ অথচ অমোঘ এমন দুটি লাইন মনে হয় কোনো উপনিষদীয় ঋষির স্বর্গীয় কাব্য সিদ্ধির অনুপম ফসল ছাড়া কিছু হতে পারে না।  বৃষ্টিপাতের সঙ্গে অনিবার্য ভাবে উচ্চারিত হওয়া এই শ্লোক কেবল সৃষ্টির আপন খেয়ালেই রচিত হতে পারে। সেই কবে থেকে এর অনন্য স্বাদ মস্তিস্কের কোষে কোষে এক অদ্ভুত ভালোলাগার মোহ তৈরি করা শুরু করেছিল তা আজও অটুট এবং সমানভাবে সক্রিয় , মোহ ভঙ্গের নামই নেই। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত এর জাদুময় মোহপাশ থেকে মুক্ত হতে পারেন নি। যদিও রবীন্দ্রনাথই প্রথম এই দুটি লাইন লেখেন ‘জীবন স্মৃতি’ র পাতায়। মনে হয় স্রষ্টা যেন নিজেই তাঁর সৃষ্টির মহিমায় হতবাক হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এখানে একটা টুইস্ট আছে। কারণ রবীন্দ্রনাথ এই দুটি লাইন লিখলেও লেখার শ্রেয় কিন্তু তিনি দিয়েছেন বিদ্যাসাগরকে। এখন প্রশ্ন, কেন! উত্তর - ভ্রান্তি সুখে। কিন্তু সে প্রসঙ্গে পরে আসছি। ‘জীবন স্মৃতি’ তে তাই দেখা গেল যতবার তিনি ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ লিখেছেন ততবারই তাকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রেখেছেন। অন্য কারোর লেখা লিখলে তাকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রাখাই দস্তুর। কিন্তু তাতে কি! শিশুবেলার মুগ্ধতা যেন কিছুতেই প্রশমিত হতে পারে...

রবীন্দ্রনাথের চোখে বিদ্যাসাগর এবং দুজনের প্রথম সাক্ষাৎ!

রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং যাকে আদিকবির আখ্যায় ভূষিত করেছেন, যার লেখা বইয়ের (বর্ণ পরিচয়) হাত ধরে তাঁর প্রথম পরিচয় বাংলা বর্ণ যোজনার সঙ্গে, মাত্র চার বছর বয়সে পড়া যার লেখার প্রভাব থেকে কোনোদিন পারেননি মুক্ত হতে, ৫১ বছর (১৯১২) বয়সে লেখা 'জীবন স্মৃতি' তে তাই যার লেখার কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন ‘জল পড়ে, পাতা নড়ে’ র মত বাংলা কাব্যের ইতিহাসে চির কালজয়ী দুটি লাইন সেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল মেট্রোপলিটন স্কুলে।   ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিদ্যাসাগর তখন মেট্রোপলিটন স্কুলের সভাপতি আর সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রামসর্বস্ব ভট্টাচার্য ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সংস্কৃত ভাষার গৃহ শিক্ষক। রামসর্বস্ব পণ্ডিত ছোট্ট রবীন্দ্রনাথ কে ‘ম্যাকবেথে’র বাংলা অনুবাদ  করে শোনাতেন, আর তা শুনে বাংলায় লিখিত তর্জমা করতে হত রবীন্দ্রনাথকে। তর্জমা সম্পূর্ণ হলে তার গুনমান বিচার করতে রামসর্বস্ব ছাত্র রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে শরণাপন্ন হলেন বিদ্যাসাগরের কাছে। কেমন ছিল সেই প্রথম সাক্ষাৎ পর্ব! রবীন্দ্রনাথ তার আত্মজীবনী ‘জীবনস্মৃতি’ তে সে কথা লিখেছেন বিস্তারিত। ‘জীবন স্মৃতি’র ‘ঘরের পড়া’ অধ্যায়ে লেখা সে কাহ...

জনগণমনঃ জাতীয় সঙ্গীত হয়ে ওঠার ইতিহাস ও কিছু প্রশ্নের উত্তর!

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ব্রহ্ম সঙ্গীত ‘ জনগণমন অধিনায়ক’ কে দেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মান্যতা দেওয়ার সর্ব সম্মীলিত সিদ্ধান্ত হয় ১৯৫০ সালের ২৪ শে জানুয়ারি । কিন্তু কেন এত দেরী? দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও কেন তিন বছর সময় লেগেছিল জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচন করতে? ‘ভারত বিধাতা’ শিরোনামে লেখা, স্বদেশ পর্যায় ভুক্ত (গীতবিতান অনুসারে) এই রবীন্দ্রগীতিটি কিভাবে -  দেশের জাতীয় সঙ্গীত হওয়ার পথে একটু একটু করে এগিয়ে গেল! ‘জনগনমন’র জাতীয় সঙ্গীত হয়ে ওঠার নেপথ্য কাহিনীই আজ আমরা ফিরে দেখবো এই প্রবন্ধে।  ১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্ট - দীর্ঘ ২০০ বছর ধরে পরাধীনতার কৃষ্ণ কাল অতিক্রম করার পরে অবশেষে দেশবাসীর ভাগ্যাকাশে এসে উপস্থিত হোল বহু আকাঙ্খিত সেই দিনটি। উদিত হোল স্বাধীনতার নতুন সূর্যের।   স্বাধীন হোল দেশ। কিন্তু সদ্য ব্রিটিশ অধীনতা মুক্ত দুটি দেশ ভারত এবং পাকিস্থান তখনও পায় নি স্বতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা। ১৯৪৭ এর ১৮ই জুলাই তারিখে লাগু হওয়া ভারতীয় স্বাধীনতা আইন অনুসারে নিজ নিজ সংবিধান প্রণয়নের আগে পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্থান এই দুটি ভূখণ্ড কমনওয়েলথ দেশের অধীনস্থ দুটি অধিরাজ্য হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে পারা...