দিল্লীতে সদ্য সমাপ্ত G20
শীর্ষ সম্মেলন এখন শুধুই একটি অতীত চর্চার বিষয়। দুই দিন ধরে চলা সম্মেলনের শেষ দিনে অর্থাৎ ১০ই সেপ্টেম্বর
রবিবার ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করে সভাপতির হাতুড়ি
প্রদান করে দিয়েছেন পরবর্তী সভাপতি দেশ, ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুলা দা সিলভার হাতে। স্বদেশে ফিরে গেছেন
সকল অতিথি রাষ্ট্রনেতারাও। আর তার পরেই শুরু
হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ; কি পেয়েছি আর কি
হারিয়েছির খুঁটি নাটি হিসেবনিকেশ।
একটু অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে যদি এর বিচার করা যায় দেখা যাবে, এই সম্মেলনে আমরা যেমন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনককে পেয়েছি সম্পূর্ণ এক নতুন অবতারে। যার
ডাউন টু দ্যা আর্থ শরীরীভাষা সম্ভবত সেরা নজরকাড়া ঘটনা হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে
১৮ তম G20 শীর্ষ সম্মেলনের শেষে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি যেন বিদেশ থেকে অনেক দিন
পরে দেশে ফেরা ঘরের ছেলে। যেমন, দিল্লীর অক্ষরধাম মন্দিরে গিয়ে ঋষির সাষ্টাঙ্গে
প্রনাম, জয় করে নিয়েছে আপামর ভারতবাসীর মন। আবার সম্মেলনে রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে ব্যক্তিগত
আলাপচারিতার যে নানা ছবি উঠে এসেছে মিডিয়ার কল্যানে তাতে সম্ভবত বাংলাদেশের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঋষি সুনকের মধ্যে কথাবার্তা চলাকালীন তোলা ছবিটিই সেরার
সেরা।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী হাসিনা চেয়ারে বসে আছেন, আর তার সঙ্গে কথা বলতে যেভাবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মেঝেতে হাঁটু গেড়ে অপেক্ষাকৃত ‘নীচু’ হয়ে বসছেন তার তুলনা মেলা ভার।
পাওয়া গেছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত হিন্দুস্থানি বিষয়ক মুখপাত্র মার্গারেট ম্যাক্লিওডকে। মার্গারেট ভারতবর্ষের হিন্দি ও উর্দু ভাষাভাষীদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ নীতির ব্যাখ্যা করেন প্রেসের কাছে। এবারের শীর্ষ সম্মেলনে মার্গারেটকে যেভাবে ভারতীয় প্রেসের সামনে সপ্রতিভ ভাবে হিন্দি বলতে শোনা গেল, তার নজির খুব একটা পাওয়া যায় না। ঝরঝরে ও অনর্গল, এবং সর্বোপরি আমেরিকান উচ্চারন দোষে দুষ্ট নয়।কিন্তু যে ছবি সম্মেলনের প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দেওয়া নৈশভোজে দেখা গেল, তার আকর্ষণ বোধহয় অন্য সব ঘটনার থেকে নজর কেড়ে নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা ANI দ্বারা প্রকাশিত নৈশভোজের যে ছবিগুলি সংবাদ মাধ্যমে এসেছে তাতে যেমন দেখা যাচ্ছে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারীতায়, তেমনি দেখা যাচ্ছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনককে ক্যাবিনেট মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে হাঁসি মজার ফোয়ারা ছোটাতে।
সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যেমন দেখা যাচ্ছে মন্ত্রী স্মৃতি ইরানীর সঙ্গে কথাবার্তা বলতে, তেমনি দেখা যাচ্ছে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দেকেও। কিন্তু ওই নৈশভোজের পুরো ফোকাস যদি কেউ কেড়ে নিতে সক্ষম হন তিনি আর কেউ নন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিসিদার শাড়ি পরিহিতা স্ত্রী যূকো কিসিদা। ভারতীয় রাষ্ট্রপতির দেওয়া ডিনারে, যূকো যে ভাবে ভারতীয় পোশাকের সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়েছেন তার জুড়ি মেলা ভার।
একটা দারুন সুন্দর পীতাভ, সবুজ শাড়ি এবং গোলাপি ব্লাউজে যূকো যতটা না সুন্দর দেখাচ্ছিলেন, তার থেকে বেশি লাবন্যময় দেখাচ্ছিলেন কারন তিনি যে সহজ সাবলীলতায় এই শাড়িটিকে পরেছিলেন, তা এককথায় অভাবনীয়। তাই শাড়ি পরা এই জাপানী ফার্স্ট লেডি যে সদ্য শেষ হওয়া G20 শীর্ষ সম্মেলনের অন্যতম সেরা পাওনা ছিলেন ভারতের কাছে, তা বললে মনে হয় বিশেষ অত্যুক্তি করা হবে না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন